জামালপুরের নকশিকাঁথাসহ তিন পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদনের জার্নাল আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বাকি দুই পণ্য হলো যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ডিপিডিটি জিআইয়ের অনুমোদন দেয়।
এখন থেকে দুই মাস এই জার্নাল ডিপিডিটির ওয়েবসাইটে রাখা হবে। কারও যদি কোনো অভিযোগ না থাকে, তবে দুই মাস পর এসব পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
মো. মুনিম হাসান আজ প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত দেশের ২১টি পণ্য জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর নতুন তিনটিসহ ১০টি পণ্যের জার্নাল প্রকাশিত হয়েছে।
এ পর্যন্ত যে ২১টি পণ্য জিআই সনদভুক্ত হয়েছে সেগুলো হলো জামদানি শাড়ি, বাংলাদেশের ইলিশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুর কাটারিভোগ, কালিজিরা চাল, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি, বাংলাদেশের শীতল পাটি, বগুড়ার দই, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ীর চমচম, কুমিল্লার রসমালাই ও কুষ্টিয়ার তিলের খাজা।
ভারতের শিল্প মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ‘বাংলার টাঙ্গাইল শাড়ি’ বা ‘টাঙ্গাইল শাড়ি অব বেঙ্গল’ নামে একটি শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই উদ্যোগ বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে। টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসায়ীসহ জিআই বিশেষজ্ঞ, আইনজ্ঞ, অধিকারকর্মীরা বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য। ভারতে ‘টাঙ্গাইল’ নামে কোনো এলাকা নেই। তাই ভারতের উদ্যোগ অন্যায্য।
ভারতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়ার পরই সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নড়েচড়ে বসে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শাড়ির জিআইয়ের আবেদন হয় গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি)। আর তা গ্রহণ করে সেদিনই অনুমোদন গেজেটের জন্য বিজি প্রেসে পাঠায় ডিপিডিটি। ৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলার জিআইয়ের আবেদন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
জিআই নিয়ে আলোচনার মধ্যে ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়ে তৎপর হতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পণ্যের জিআই নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তৎপর হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “সবাই তৎপর হয়ে আমাদের যেসব পণ্য আছে, সেগুলোর জিআই স্বীকৃতি যেন করে ফেলা হয়।”’