জনগণের সেবা পাওয়ার ভরসাস্থল থানা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দিতে পুলিশ সদস্যদের সচেষ্ট থাকতে হবেও বলে জানান তিনি।
পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩–এর তৃতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে প্রধান অতিথি হিসেবে আইজি ব্যাজ দেওয়ার অনুষ্ঠানে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এসব কথা বলেন।
শিল্ড প্যারেড, অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালান দ্রব্য উদ্ধার অভিযানে কৃতিত্ব অর্জনকারী ইউনিটকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পুলিশে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আইজিপি বিভিন্ন ইউনিটের ৪৫৮ পুলিশ সদস্যকে এবার ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২২ (আইজি’জ ব্যাজ) পরিয়ে দেন।
আইজিপি বলেন, পুলিশের পেশাগত উৎকর্ষ দিন দিন বাড়ছে। পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যাশাও বেড়েছে। সমাজের সব শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত সেবা পৌঁছে দিতে পুলিশ সদস্যদের সচেষ্ট থাকতে হবে। থানা হবে জনগণের সেবাপ্রাপ্তির ভরসাস্থল। তিনি বলেন, পুলিশের সাম্প্রতিক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপ সব মহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। সততা ও স্বচ্ছতার এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
পুলিশপ্রধান বলেন, পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণুতা) নীতিতে বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করছে উল্লেখ করে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুলিশের বর্তমান অবস্থান আরও দৃঢ় করতে হবে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হিসেবে নিজেদের মর্যাদা স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
পুলিশপ্রধান বলেন, পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
পুরস্কারপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, পুরস্কার সম্মান, গর্ব ও অহংকারের স্মারক। পুরস্কার ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা জোগায়। নিজেদের কর্মস্পৃহা শাণিত করে। তিনি বলেন, পুলিশকে অভিযান কার্যক্রমে পেশাদারির সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে দৃষ্টিনন্দন প্যারেড উপহার দেওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
গত ১ জানুয়ারি ২০২২ থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২২ তারিখ পর্যন্ত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা, দ্বিতীয় পাবনা জেলা ও তৃতীয় কুমিল্লা জেলা। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম কক্সবাজার, দ্বিতীয় নরসিংদী ও তৃতীয় যশোর। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম এপিবিএন, দ্বিতীয় রাজবাড়ী ও তৃতীয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ‘ঘ’ গ্রুপে প্রথম র্যাব-১৫, কক্সবাজার, দ্বিতীয় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ও তৃতীয় র্যাব-৫, রাজশাহী। ‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম ডিবি, ডিএমপি, যৌথভাবে দ্বিতীয় ডিএমপির রমনা বিভাগ ও মিরপুর বিভাগ এবং তৃতীয় ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি।
২০২২ সালে মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান পণ্য উদ্ধার অভিযানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ইউনিটে মধ্যে মাদকদ্রব্য উদ্ধারে ‘ক’ গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করে কুমিল্লা, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম ও তৃতীয় সিএমপি। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া, দ্বিতীয় কক্সবাজার ও তৃতীয় রাজশাহী। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম লালমনিরহাট, দ্বিতীয় জয়পুরহাট ও তৃতীয় গাজীপুর। ‘ঘ’ গ্রুপে প্রথম র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ, দ্বিতীয় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ও তৃতীয় র্যাব-১৫, কক্সবাজার। ‘ঙ’ গ্রুপে প্রথম ডিবি, ডিএমপি, দ্বিতীয় ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি ও তৃতীয় মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি। ‘চ’ গ্রুপে প্রথম হয়েছে এপিবিএন, দ্বিতীয় রেলওয়ে পুলিশ ও তৃতীয় হাইওয়ে পুলিশ।
চোরাচালন পণ্য উদ্ধার অভিযানে ‘ক’ গ্রুপে চট্টগ্রাম প্রথম, সিএমপি দ্বিতীয় ও কুমিল্লা তৃতীয় হয়েছে। ‘খ’ গ্রুপে প্রথম যশোর, দ্বিতীয় নেত্রকোনা ও তৃতীয় সাতক্ষীরা। ‘গ’ গ্রুপে প্রথম চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দ্বিতীয় মেহেরপুর ও তৃতীয় পঞ্চগড়। ‘ঘ’ গ্রুপে র্যাব-৯, সিলেট প্রথম, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম দ্বিতীয় ও র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ তৃতীয়। ‘ঙ’ গ্রুপে মিরপুর বিভাগ, ডিএমপি প্রথম, ওয়ারী বিভাগ, ডিএমপি দ্বিতীয় ও উত্তরা বিভাগ, ডিএমপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। ‘চ’ গ্রুপে এবিপিএন প্রথম, রেলওয়ে পুলিশ দ্বিতীয় ও হাইওয়ে পুলিশ তৃতীয় হয়েছে।
শিল্ড প্যারেড প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে যৌথ মেট্রো দল। দ্বিতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও তৃতীয় এপিবিএন।
বার্ষিক পুলিশ প্যারেড কুচকাওয়াজে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এপিবিএন। দ্বিতীয় হয়েছে যৌথ মেট্রো দল ও তৃতীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ।