সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিল পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ঢাকা কলেজের প্রধান ফটক থেকে শাহবাগের দিকে মিছিলটি বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বেলা সাড়ে তিনটায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে দেরি হয়। বৃষ্টি শেষে শিক্ষার্থীরা কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন। মিছিলে ইডেন কলেজের কিছু শিক্ষার্থীও অংশ নেন।
মিছিলটি ঢাকা কলেজের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে যায়। সেখানে আগে থেকে পুলিশ অবস্থান নিয়ে ছিল। পরে মিছিলটি ঘুরে সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে নীলক্ষেত মোড়ের দিকে যায়। নীলক্ষেত মোড়ে গেলে মিছিলে আবার বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের চাপের মুখে পিছু হটেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত থেকে সায়েন্স ল্যাবের উদ্দেশে রওনা দেন। মিছিলটি ঢাকা কলেজের সামনে গেলে পুলিশ আবার বাধা দেয়। তখন আন্দোলন শেষ করে ঢাকা কলেজের ভেতরে চলে যেতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ দেয় পুলিশ। এ সময় রাস্তার অপর পাশ দিয়ে ছাত্রলীগের কয়েক শ নেতা–কর্মীদের একটি মিছিল যাচ্ছিল। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
ছাত্রলীগের মিছিল চলে গেলে একপর্যায়ে পুলিশের চাপের মুখে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা বিকেল পাঁচটার দিকে আজকের মতো আন্দোলন সমাপ্ত ঘোষণা করেন। কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণার সময় ঢাকা কলেজের আন্দোলনের সমন্বয়কারী নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমরা হতাশ। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার অধিকার সংবিধান দিয়েছে।’ শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের বাধার নিন্দা জানান নাজমুল হাসান।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। নাজমুল হাসান বলেন, ‘পুলিশকে যদি কেউ ছাত্রসমাজের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চায়, আমরা তা মেনে নেব না। সারা দেশে যে কর্মসূচি আগামীকাল শুক্রবার দেওয়া হবে, তা ঢাকা কলেজ বাস্তবায়ন করবে।’
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিলে কেন বাধা দেওয়া হলো—জানতে চাইলে নিউমার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রিফাতুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধু শাহবাগে অবস্থান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শাহবাগের বাইরে তাঁরা কোথাও যেতে পারবেন না। শিক্ষার্থীরা তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকেই যাচ্ছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল তাঁরা নীলক্ষেতে বসে পড়বেন।’