ঢাকায় আন্তর্জাতিক ইসলামি মহাসম্মেলন করবেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। আগামী ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাঁরা এ মহাসম্মেলন করতে চান। যদিও এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এখনো আবেদন করা হয়নি।
সাদ কান্ধলভীর অনুসারী ও কাকরাইল মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মদ আযীমুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ইসলামি মহাসম্মেলনে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, মিসর, তুরস্কসহ ইউরোপ, আমেরিকা থেকেও প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ‘মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা এবং পথ ও পন্থা’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক ইসলামিক মহাসম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
মুহাম্মদ আযীমুদ্দিন জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আন্তর্জাতিক ইসলামিক মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হবে। সম্মেলনে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মাহমুদুল হাসান বা চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদ্রাসার মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতিত্ব করার প্রস্তাব দেওয়া হবে।
৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন করে তাবলিগ জামাতের কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলেমদের সংগঠন ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ। এটি মূলত তাবলিগ জামাতে জোবায়েরপন্থী অংশ। তারা মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ঢাকায় আসতে না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সেই সঙ্গে কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা এককভাবে করার ঘোষণা দেয়। আজ শুক্রবার সাদপন্থীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলনের ঘোষণা দেন।
এদিকে ১২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন তাবলিগের জোবায়েরপন্থী ওলামা-মাশায়েখদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, তাবলিগ জামাতের দুটি পক্ষের বিবদমান সমস্যার সমাধানে আগামী বছরের এপ্রিলে পদক্ষেপ নেবে সরকারের স্বরাষ্ট্র ও ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে পর্যন্ত দুই পক্ষই আগের সমঝোতা অনুযায়ী কাকরাইল মসজিদে থাকবে, পৃথকভাবে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমারও আয়োজন করবে।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, কাকরাইল মসজিদ ও মারকাজ (কেন্দ্র) চার সপ্তাহ জোবায়েরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পরের দুই সপ্তাহ থাকবে সাদপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে। আজ সাদপন্থীদের দুই সপ্তাহ শুরু হয়েছে। হাজার হাজার সাদপন্থী একত্রে কাকরাইল মসজিদে যান এবং জুমার নামাজ আদায় করেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাদপন্থীরা মসজিদে প্রবেশের সময় কিছুটা হট্টগোল হয়। তবে পরে কোনো সমস্যা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ শুরু উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাদপন্থীরা ঢাকায় আসেন। তাঁরা কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় জড়ো হয়ে একত্রে কাকরাইল মসজিদের দিকে যান। মসজিদে সাদপন্থীরা প্রবেশের সময় কিছুটা হট্টগোল হলে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, সবাই জুমার নামাজ আদায় করেছেন। কোনো ঝামেলা হয়নি। নামাজ শেষে মুসল্লিরা চলে যান।
যদিও সাদপন্থীরা মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসতে অনুমতি দেওয়া দেওয়ার দাবি করছেন।