আন্দোলনের মুখে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চিকিৎসকদের ভাতা ৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করেছে সরকার। তবে এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত এই চিকিৎসকেরা। কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ের আবাসিক ও অনাবাসিক চিকিৎসকেরা মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পান। এ ভাতা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার দাবি করে আসছেন তাঁরা। কয়েক মাস ধরেই চিকিৎসকেরা এ দাবিতে কর্মসূচি পালন করছেন।
আজ রোববার রাতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্নাতকোত্তরের চিকিৎসকদের ভাতা পাঁচ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। অবিলম্বে তা কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, ভাতা আরও বাড়ানোর দাবিতে তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। দাবি আদায়ে পরবর্তী সময়ে নতুন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
ভাতা বাড়ানোর দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকেরা ৮ জুলাই কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন শুরু করেন। পরদিন ৯ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এর আগে গত ১৩ জুন বিএসএমএমইউ উপাচার্যকেও অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন।
আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা জানান, ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেন তাঁরা। তারপরও কোনো উদ্যোগ না দেখে সর্বশেষ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
আজ সকালে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশি বাধায় তা করতে পারেননি চিকিৎসকেরা। পরে দুপুরের দিকে বিএসএমএমইউর সব ফটকে তালা দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে তাঁরা অবস্থান নেন। পরবর্তী সময়ে বেলা একটার দিকে বিএসএমএমইউ থেকে বের হয়ে শাহবাগে অবস্থান করতে চাইলে পুলিশ ও চিকিৎসকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর একপর্যায়ে শাহবাগ থেকে কাটাবনমুখী সড়ক অবরোধ করে সেখানে অবস্থান নেন চিকিৎসকেরা। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা যেমন দুর্ভোগে পড়েন, তেমনি সড়কেও যানজট তৈরি হয়।
চিকিৎসকদের আন্দোলনের মধ্যে বিকেলে তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল বিএসএমএমইউ উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে। উপাচার্য এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলে সড়ক ছাড়েন তাঁরা। পরে পাঁচ হাজার টাকা ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা আসে।
স্নাতকোত্তরের চিকিৎসকেরা উচ্চশিক্ষার জন্য দুই বছর থেকে পাঁচ বছরের জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। এ সময় তাঁরা হাসপাতালের বাইরে অন্য কোথাও সেবা দিতে পারেন না। আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা বলছেন, বর্তমান বাজারে ২০ হাজার টাকায় রাজধানীর মতো শহরে থেকে সংসার চালানো কঠিন।