চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ধারালো অস্ত্র হাতে থাকা ৩ ছাত্রলীগ কর্মী শনাক্ত 

রামদা হাতে সাব্বির হোসেন (ডানে)
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে ছিলেন অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ভিডিও চিত্র দেখে ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

তাঁরা হলেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের স্নাতকোত্তরের সাব্বির হোসেন, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মোহাম্মদুজ্জামান ওমর ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাইম আরাফাত। তিনজনের হাতেই ছিল রামদা। 

এর মধ্যে ওমর থাকেন শাহ আমানত হলের একটি কক্ষে। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের নেতৃত্বাধীন উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) কর্মী। আর সাব্বির ও নাইম থাকেন শাহজালাল হলে। তাঁরা দুজন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের অধীন সিক্সটি নাইনের কর্মী। 

রামদা হাতে থাকার বিষয়টি ওই তিন কর্মীই স্বীকার করেছেন। জানতে চাইলে সাব্বির হোসেন ও নাইম আরাফাত প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, সিএফসির কর্মীদের হামলা থেকে বাঁচতে আত্মরক্ষার জন্য দা নিয়েছেন তাঁরা। আর মোহাম্মদুজ্জামান ওমরের দাবি, সিক্সটি নাইনের এক কর্মী রামদাটি তাঁর দিকে ছুড়ে মেরেছিলেন। তিনি এটি নিচে থেকে কুড়িয়ে হাতে নিয়েছেন।

রামদা হাতে মোহাম্মদুজ্জামান ওমর

অস্ত্রধারীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে সভাপতি রেজাউল হক বলেন, যাঁরা শনাক্ত হয়েছেন, তাঁরা কেউই সংগঠনের পদধারী নন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনও একই কথা বলেন। 

গত বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই দফায় সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিএফসি ও সিক্সটি নাইন। এতে ১৬ জন আহত হন। এর আগে গত পাঁচ বছরে ১২ বার সংঘর্ষে জড়িয়েছে এই দুটি উপপক্ষ। 

রামদা হাতে নাইম আরাফাত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হাটহাজারী থানার অধীন। সংঘর্ষের সময় থানা–পুলিশ ও র‍্যাব গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রধারীদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। 

ছাত্রলীগের এ সংঘর্ষের ঘটনায় তিন সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার। তিনি বলেন, দুটি তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটিই যাচাই-বাছাই করে অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।