নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ। অভিযোগে বলা হয়, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকে থাকাকালে তিনি তাঁর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশন লিমিটেডকে ব্যাংক থেকে বেআইনিভাবে সাড়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন।
অধিকতর তদন্তের জন্য আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসে এই অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে অভিযোগটি জমা দেন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার সাহা। এ সময় তাঁর সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান আইন উপদেষ্টা মাসুদ আখতারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রদীপ কুমার সাংবাদিকদের বলেন, ড. ইউনূস ১৯৮৩ সালে বেআইনিভাবে তাঁর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান প্যাকেজেস করপোরেশন লিমিটেডকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সাড়ে ৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ঋণ ও সুদ মওকুফ করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান ছাড়াই উচ্চ দরে গ্রামীণ ব্যাংকের কোটি কোটি টাকার প্রিন্টিং সামগ্রী ছাপানোর কার্যাদেশ প্যাকেজেস করপোরেশনকে দিয়েছিলেন।
প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের ১৯৮৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরের নিরীক্ষা করা হয়েছে। এই নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের চিত্র উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ড. ইউনূস ভূমিহীন দরিদ্র মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পরিবর্তে নিজের ভাগ্য উন্নয়ন করেছেন। তাঁরা তাঁর অনিয়মের বিচার চান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, তিনি ৩৫ বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ে চাকরি করেছেন। কিন্তু তখন তিনি এসব অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ–আল–মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই। এ ধরনের অভিযোগ যদি করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটা সন্দেহজনক। কারণ, ড. ইউনূসকে ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এরপর ইন্টারনাল অডিট, এক্সটারনাল অডিট ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অডিট হলো, তখন কিছু পেল না। এখন এত বছর পর হঠাৎ এ রকম অভিযোগ করা হলে স্বাভাবিকভাবেই তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে।’