জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন দুই ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মুতর্জা ও সাকিব আল হাসান। গতকাল রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মাগুরা-১ (শ্রীপুর ও সদরের একাংশ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাকিব আল হাসান পেয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৮ ভোট। সদরের একাংশ ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের ১৫২ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৪৮৫। এই আসনে প্রায় ৫০ দশমিক ০১ শতাংশ ভোট পড়েছে। দিনভর শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় কোথাও কোনো সহিংসতার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাকিবের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ কংগ্রেসের কাজী রেজাউল হোসেন ডাব প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৭৩ ভোট। এই আসনে অন্য তিন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে জাতীয় পার্টির মো. সিরাজুস সায়েফিন (লাঙ্গল প্রতীক) পেয়েছেন ২ হাজার ৩৪৩ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) এম মোতাসিম বিল্লা (টেলিভিশন প্রতীক) পেয়েছেন ৬৫৪ ভোট আর তৃণমূল বিএনপির সনজয় কুমার রায় (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ৮৬৮ ভোট।
অপরদিকে নড়াইল-২ (লোহাগড়া উপজেলা ও সদরের একাংশ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। মাশরাফি ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৮৯ হাজার ১০২টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪ হাজার ৪১ ভোট। নড়াইল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী শেখ হাফিজুর রহমান ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন। গতকাল রোববার বেলা পৌনে দুইটায় নড়াইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কতিপয় কেন্দ্রে জোর করে আমার এজেন্ট বের করে দিয়ে ব্যালটে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে।’ এ সময়ে ওয়ার্কার্স পার্টির কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে মাশরাফির ঘনিষ্ঠ সমর্থক লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশিয়ূর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসব অভিযোগ বানোয়াট। তাঁর দলের অবস্থান এ আসনে খুবই দুর্বল। নিজেরও তেমন কোনো লোকজন নেই।’
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আটজন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সৈয়দ ফয়জুল আমির (ট্রাক) ও মো. নূর ইসলাম (ঈগল)। এ ছাড়া বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির খন্দকার ফায়েকুজ্জামান (লাঙ্গল), ইসলামী ঐক্যজোটের (আইওজে) মো. মাহবুবুর রহমান (মিনার), এনপিপির মো. মনিরুল ইসলাম (আম) ও গণফ্রন্টের মো. লতিফুর রহমান (মাছ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাশরাফির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে ৭ হাজার ৮৮৩ ভোট পেয়েছিলেন। মাশরাফি পেয়েছিলেন ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট।