রাজধানীর বেইলি রোডের সাততলা ভবনটিতে কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ভবন কর্তৃপক্ষকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে। আজ শুক্রবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি পরিদর্শনে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এই ভবনে কোনো ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে লাগা ওই আগুনে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২ জন ভর্তি আছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ভবনের অল্প কিছু রেস্তোরাঁ বাদে বেশির ভাগেরই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না। এখানে গাফিলতি ছিল। এ ঘটনায় কার কতটুকু দায়, তা তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করবে।
ভবনটির অনুমোদন ছিল কি না, সে প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) তা দেখবে এবং তদন্ত কমিটিও তা খতিয়ে দেখবে।
ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটি প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ক্রেনের সাহায্যে ভবনের সপ্তম তলা ও ছাদে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনতে থাকেন তাঁরা। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।