ছাত্রদল আয়োজিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মানবাধিকার ভাবনা ও ছাত্রসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা
ছাত্রদল আয়োজিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মানবাধিকার ভাবনা ও ছাত্রসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা

মানবাধিকার দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের আলোচনা সভা

ছাত্রদলের ওপর শত শতবার হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত নেতা–কর্মী চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে, লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মানবাধিকার ভাবনা ও ছাত্রসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন–সংলগ্ন বটতলায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

সভায় বক্তারা আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম, হত্যাসহ সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে মানবাধিকারের পক্ষে লড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনার আমলে জিয়া পরিবারের ওপর এবং নিজের ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছিল, তা তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুর্শেদ হাসান খান। তিনি বলেন, মিথ্যা মামলা করে বছরের পর বছর কারাবন্দী করে রেখেছিল দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে।

মুর্শেদ হাসান খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্টদের নিয়ে কাজ করছে। এই প্রশাসনের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের রিক্রুট করা হয়েছে।’ তিনি এসব বিষয়ে ছাত্রদলকে সজাগ থাকার এবং প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান।

দেশ পরিচালনায় ছাত্ররাজনীতির কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহমিনা রুশদি রুনা বলেন, আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে গুমের সংস্কৃতি চালু করেছিল। বিগত ১৫ বছরে যত গুম হয়েছে, এর মধ্যে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী বেশি।

সভায় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে, রাজু ভাস্কর্যের সামনে পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের ওপর শত শতবার হামলা করেছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত নেতা-কর্মী চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে, লেখাপড়া শেষ করতে পারেনি। ছাত্রলীগের সেই সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

রাকিবুল ইসলাম বলেন, ছাত্রসমাজ স্বীকার করতে বাধ্য হবেন, এই জুলাই-আগস্টের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েছে ছাত্রদলের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে।

ডাকসু নিয়ে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ছাত্রদল বিগত সাড়ে ১৫ বছরে শুধু ডাকসু নির্বাচনকেন্দ্রিক বাস্তবতায় সামান্য সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ক্যাম্পাসে আসার সুযোগ পেয়েছে। এই সাড়ে ১৫ বছরে আমরা কোনো কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি। ছাত্রদল যেন তার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহবান জানাই।

এ ছাড়া আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মানবাধিকার সেলের সদস্য ফারজানা শারমিন, আইন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, নেত্র নিউজের সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশচন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ ছাত্রদলের অন্যান্য নেতা।