দেশকে ধ্বংস করার যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) নির্বাচন বর্জনের পর সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করতে এবং জনদুর্ভোগ বাড়াতে চায়।’
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলটির আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে তারা (বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোট) ৩০টি আসন পেয়েছিল। তার পরে তাদের আরও খারাপ অবস্থা। এখন নির্বাচন না করে নির্বাচন বানচাল করতে এবং দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে। সে বিষয়ে মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা জয় বাংলা স্লোগানে বিশ্বাস করে না, ৭ মার্চের ভাষণকে প্রেরণা বলে মনে করে না, তার অর্থ তারা স্বাধীন বাংলাদেশই চায় না। বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন তথা তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন তারা চায় না। কাজেই তাদেরকে মানুষ কেন ভোট দেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আসলে যার দাঁত তার ব্যথা, যে কষ্ট করে, সে বোঝে মানুষের জন্য তার কী করতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে যান। কিন্তু এরপরের ২৯ বছরে দেশ কিন্তু এক কদমও আগে বাড়েনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এবং ইনশা আল্লাহ একদিন জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।’
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দলের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আবৃত্তিকার শিমূল মুস্তাফা নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা এই শব্দটি কী করে আমাদের হলো’ কবিতাটি আবৃত্তি করে শোনান।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আওয়াল শামীম আলেচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। একটি পরাধীন জাতিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে প্রতিরোধের ডাক দেওয়া এই ভাষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক দিকনির্দেশনা। বাঙালির মুক্তির সশস্ত্র সংগ্রামে অফুরান প্রেরণার উৎস ছিল এই ভাষণ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে মানুষকে উদ্বুদ্ধকারী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় দিবসগুলো সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে সম্যক ধারণা দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ সব অভিভাবকের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিবস, ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এই দিবসগুলো সম্পর্কে যেন আমাদের যুবসমাজ প্রত্যেকেই জানে এবং জানতে পারে। কেননা সকলেরই এসব জানা উচিত।’