টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকায় ঈগল পরিবহন বাসের ডাকাতিকালে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি হাসপাতালে—এ তথ্য তাঁর পরিবার আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জানত না। মেয়েটির বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। বাবা কৃষক, মা গৃহিণী। তাঁরা মেয়েকে ঢাকায় যেতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু মেয়ের এক কথা, ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ করবেন।
এই প্রতিবেদক যখন ওই বাড়িতে গিয়ে পৌঁছান, তখন গ্রামের মাঠ থেকে ঘাস কেটে বাবা-মা দুজনে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির সামনে তাঁদের সঙ্গে দেখা। মেয়ের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই দুজনেই পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘মেয়ের কী হয়েছে?’
বাস ডাকাতির কবলে পড়েছে—এ খবর জানানোর পর তাঁদের এক নিকটাত্মীয় দৌড়ে এসে খবর দেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মুঠোফোন করে জানিয়েছেন তাঁদের মেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েছেন। টাঙ্গাইলে একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ খবর শোনার পর মেয়েটির মা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠেই বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে অনেকটা জোর করেই তাঁর মেয়ে ঢাকায় যান। ঢাকায় যাওয়ার জন্য বারণ করেছিলেন তিনি।
বাবা বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি তখন খাচ্ছিলাম। মেয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। বলে, ঢাকাতে গার্মেন্টসে চাকরি করবে। আমিও নিষেধ করেছিলাম, শোনেনি কথা।’
মেয়েটির চাচাতো বোন বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে একবার ফোনে কথা হয়েছিল। বলেছে সে তখন পাবনায়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। কোনো ফোন দেয়নি।’
বাবা-মা দুজনই বলেন, চার থেকে পাঁচ বছর আগে ঈগল পরিবহন বাসের এক সুপারভাইজারের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। তবে জামাতার সঙ্গে তেমন একটা যোগাযোগ হয় না।
একটু পর আবারও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফোন করে মেয়েটির মা–বাবাকে তাঁর বাড়িতে যেতে বলেন। তাঁরা হন্তদন্ত হয়ে ইউপি সদস্যের বাড়ির দিকে গেলেন।
প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী একটি বাসে মঙ্গলবার গভীর রাতে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল বাসটি কয়েক ঘণ্টা তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে ভেতরে যাত্রীদের মারধর ও লুটপাট চালায়। এ সময় এক নারী যাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে বাসটিকে রাস্তার পাশে কাত করে ফেলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।