ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাল গণসংহতি আন্দোলন

ছাত্র অধিকার পরিষদের ডাকা বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণসভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ
ছবি: প্রথম আলো

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান বলেছেন, যারা তিন বছর আগে বুয়েট ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তাদের অনুসারীরাই স্মরণসভায় হামলা চালিয়েছে। গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তাঁরা।

বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’–এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করে তাদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। হামলায় পরিষদের অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানে গিয়েও তাঁদের পেটায় ছাত্রলীগ। বিকেলে মেডিকেল থেকে পরিষদের অন্তত ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করে শাহবাগ থানার পুলিশ।

হামলা ও পুলিশের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শনিবার এক বিবৃতিতে জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান রুবেল বলেছেন, ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষের কণ্ঠ রোধ করতেই আবরারের হত্যাকারীদের উত্তরসূরিরাই হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা আখতার হোসনসহ ২৪ আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। হামলাকারীদের প্রটোকল দিয়ে পুলিশ বরং হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের ভূমিকা এটিই প্রমাণ করে যে সরকারের মতো এই রাষ্ট্রও জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগের হামলায় প্রায় ২০ জন আহত হয়ে ঢামেকে চিকিৎসা নিতে গেলে আবারও হামলা করা হয় তাঁদের ওপর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নীরব ভূমিকা এটিই প্রমাণ করে যে তারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মদদ দেয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব কায়েম করে শিক্ষাঙ্গনসহ সর্বত্র দখল বজায় রাখতে চায় সরকার। এভাবে ছাত্রলীগ ও পুলিশ দিয়ে সন্ত্রাস করে বা ভয় দেখিয়ে সরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারবে না। সরকার যখন জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন সেই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের জাগরণ অবশ্যম্ভাবী। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।

গ্রেপ্তার নেতা–কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনকে ভয়মুক্ত নিরাপদ জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।