দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের আনুষঙ্গিক জটিলতা এবং এর চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে একটি আলোচনা সভা হয়েছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড সম্প্রতি এ সভার আয়োজন করে। ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় দেশের প্রায় ১৭০ জন নেফ্রোলজিস্ট (কিডনি বিশেষজ্ঞ) উপস্থিত ছিলেন।
সভার প্রথম অংশে আলোচকেরা বলেন, দেশে প্রায় ৭৪ শতাংশ কিডনি রোগীর রক্তে উচ্চমাত্রার ফসফেট থাকে। এটাকে বলা হয় হাইপারফসফেটেমিয়া। এর কারণে কিডনি রোগীদের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন হাড় ও মাংসপেশির জটিলতা, রক্তজনিত জটিলতাসহ বিভিন্ন ধরনের হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে।
সভায় হাইপারফসফেটেমিয়ার ব্যবস্থাপনা নিয়ে মূল বক্তব্য দেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজির (নিকডু) সহযোগী অধ্যাপক মরিয়ম মোবাশ্বেরা। তিনি বর্তমান হাইপারফসফেটেমিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট ফসফেট মাত্রায় না পৌঁছানো, রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রাধিক্য, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবন ইত্যাদি তুলে ধরেন। পাশাপাশি সুক্রোফেরিক অক্সিহাইড্রোক্সাইড দিয়ে কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা যায়, তা আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের এ অংশের চেয়ারপারসন ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের কিডনি রোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নিকডুর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামীম আহমেদ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. মুহিবুর রহমান এবং বারডেমের নেফ্রোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান সারওয়ার ইকবাল।
সভার দ্বিতীয় ভাগে অধিকাংশ কিডনি রোগীর রক্তস্বল্পতা এবং এর কারণে কিডনি রোগীদের মৃত্যুঝুঁকির বিষয়ে আলোচনা হয়। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (সিকেডি) রোগীদের অ্যানেমিয়া চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করেন নিকডুর নেফ্রোলজি বিভাগের রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট নওরিন আমিন। তিনি বর্তমান সিকেডিজনিত অ্যানেমিয়া রোগের চিকিৎসাপদ্ধতিগুলো তুলে ধরেন এবং সিকেডিজনিত অ্যানেমিয়া চিকিৎসায় ওরাল রক্সাডুস্ট্যাটের ভূমিকা তুলে ধরেন।
আলোচনার এ অংশে চেয়ারপারসন ছিলেন নিকডুর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামীম আহমেদ। এ পর্যায়ে প্যানেল বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক এ এইচ হামিদ আহমেদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম, নিকডুর নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ও বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক কাজী শাহনুর আলম এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রতন দাস গুপ্ত। এ আলোচনায় এরিথ্রোপোয়েটিনের বিকল্প হিসেবে ওরাল রক্সাডুস্ট্যাটের ভূমিকা উঠে আসে।
সভায় কিডনি রোগীদের হাইপারফসফেটেমিয়ায় ব্যবহৃত নতুন ওষুধ DEPHOS (সুক্রোফেরিক অক্সিহাইড্রোক্সাইড) ও রক্তস্বল্পতায় ব্যবহৃত OROXAT (ওরাল রক্সাডুস্ট্যাট) নিয়ে আলোচনা করা হয়। শেষে এসকেএফের মার্কেটিং বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ধন্যবাদ জানিয়ে সভা শেষ করেন। সভা সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক এস এম রেমিন রাফি।