নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ভিন্ন নামে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন চেয়েছে কি না, তা আগাম বলা ঠিক হবে না। যাচাই–বাছাইয়ে যদি প্রমাণ হয় আদালতের রায়ে নিবন্ধন হারানো জামায়াত ভিন্ন নামে নিবন্ধনের জন্য এসেছে, তাহলে কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা এসব কথা বলেন। এর আগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম–৭১ নির্বাচন কমিশনে একটি স্মারকলিপি দেয়। বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিসহ (বিডিপি) জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে ইসিতে নিবন্ধন না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
ইসিতে নিবন্ধনের জন্য বিডিপি ইতিমধ্যে আবেদন করেছে। এই দলের নেতৃস্থানীয়রা জামায়াত–শিবিরের নেতা। এই নিবন্ধনের আবেদন আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর পরিকল্পনার অংশ কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রজন্ম–৭১ ওই দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার দাবি জানিয়ে ইসিকে স্মারকলিপি দিল।
ইসিতে নিবন্ধনের জন্য বিডিপি ইতিমধ্যে আবেদন করেছে। এই দলের নেতৃস্থানীয়রা জামায়াত-শিবিরের নেতা। এই নিবন্ধনের আবেদন আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামীর পরিকল্পনার অংশ কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, বিডিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। অন্যরা বলছেন যে তারা (জামায়াতে ইসলামী) অন্য নামে আবেদন দিয়েছে। সেটা প্রমাণের বিষয়। আগে যাচাই–বাছাই হোক, তখন বলা যাবে। তিনি বলেন, শুধু বিডিপি নয়, যে ৯৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, সবার বিষয়ে আইনি কাঠামোসহ সবকিছু যাচাই–বাছাই করে দেখা হবে। গঠনতন্ত্র যাচাই করেই নিবন্ধন দেওয়া হবে।
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রজন্ম একাত্তর স্মারকলিপি দিয়ে গেছে। আগে দেখব, জানব তারপর বলতে পারব। জামায়াত অন্য আদলে আসছে কি না, তা অগ্রিম বলা ঠিক হবে না। কমিশন মিটিংয়ে ফরমালি না আসলে বলা যাবে না। এগুলো আসলে প্রমাণ হোক, তারপর আমরা পাঁচ কমিশনার বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। নিবন্ধন না থাকায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এখন নতুন করে তারা কীভাবে আসছে, তা খতিয়ে না দেখে বলা যাবে না। এখন যদি প্রমাণ হয় তারা ভিন্ন নামে এসেছে, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।
নিবন্ধন দেওয়াটা আইনের বিষয় উল্লেখ করে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘এগুলো আইনের বিষয়, শর্ত পূরণের বিষয়, প্রমাণ করার বিষয় যে আসলেই জামায়াতই আসল অন্যভাবে। আগে প্রমাণ হোক তাপরপ আমরা পাঁচজনে বসে সিদ্ধান্ত নেব। তবে আইনের কথা যদি বলি জামায়াত যেহেতু কোর্টের আদেশে নিবন্ধন বাতিল হয়ে গেছে, সেখানে নতুন করে জামায়াতকে দেওয়ার তো সুযোগ নেই।’
এর আগে বিডিপিসহ জামায়াত–সংশ্লিষ্ট কোনো দলকে নিবন্ধন না দেওয়ার দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর স্মারকলিপি দেয় প্রজন্ম–৭১। সংগঠনটির সভাপতি আসিফ মুনীর সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি নিবন্ধনের আবেদন করেছে জেনেছে তাঁরা শঙ্কিত। তাঁরা চান যাদের কোনো না কোনোভাবে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে, এমন কোনো ব্যক্তি যদি দল গঠন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন, তাদের যেন নিবন্ধন দেওয়া না হয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী তদন্ত করবে। শুধু বিডিপি নয়, অন্য কোনো দলও যদি এ রকম নামে থাকে, তাদের নিবন্ধন যাতে না দেওয়া হয়।
এ সময় প্রজন্ম–৭১–এর পক্ষে সাইফুদ্দিন আব্বাস, নুজহাত চৌধুরী, তানভীর হায়দায় চৌধুরী, অনল রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।