আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটার মধ্যে বর্তমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, তা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। ভিডিও বার্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম কথা বলেন। তাঁর পাশে আরও দুই সমন্বয়ককে দেখা যায়।
ভিডিও বার্তায় বলা হয়, শহীদের রক্তের বিনিময়ে ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাঁরা যে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছেন, আর একটি নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, তাকে নস্যাৎ করতে বিভিন্ন শক্তি ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তাঁরা মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছেন, এ বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য এবং একটি নতুন বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য, সব ধরনের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য, প্রতিহত করার জন্য দেশের ছাত্র-জনতা সদা প্রস্তুত রয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন, নানা জায়গায় লুটপাট, সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক হামলার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। তাঁরা মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, এ ধরনের ঘটনাকে প্রতিহত করার জন্য তাঁদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাঁদের দায়িত্ব নিতে হবে। কেউ যাতে এ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে তাঁদের সদা সতর্ক থাকতে হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা আরও দেখতে পাচ্ছেন, রাষ্ট্রপতি গতকাল সোমবার বলেছিলেন, অনতিবিলম্বে তিনি জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করবেন। কিন্তু তাঁরা এখনো দেখছেন, একটি অভ্যুত্থানের পরও ফ্যাসিস্ট হাসিনার জাতীয় সংসদ রয়ে গেছে। তাই তাঁরা ঘোষণা করছেন, আজ বেলা তিনটার মধ্যে এই সংসদের বিলুপ্তি ঘোষণা করতে হবে। যদি আজ বেলা তিনটার মধ্যে সংসদের বিলুপ্তির ঘোষণা না আসে, তবে তাঁরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
ভিডিও বার্তায় বলা হয়, যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা তাঁরা বলেছেন, সে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নাম ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। এ সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টাসহ সামগ্রিক রূপরেখা তাঁদের প্রস্তুত রয়েছে। তাঁরা খুব শিগগিরই সে রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন। তাঁরা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা চান। সমাজে ন্যায়বিচার চান। সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথম পদক্ষেপটি হতে হবে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান রাখুন। শান্তিপূর্ণভাবে, অহিংসভাবে এবং সব পরিকল্পনাকে, ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করার জন্য সদা সতর্ক থাকুন।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তাঁর টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হলো। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।