জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)

লোকবলসংকটে থাকা জামুকার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন

লোকবলসংকটে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) কার্যক্রম। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীন এই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত লোকবল ৩২ জন। বর্তমানে অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য। কাজ করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে জামুকার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের।

জামুকার কাজের পরিধি বেশ বড়। প্রতিষ্ঠানটি নতুন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির আবেদন যাচাই–বাছাই, গেজেটপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তথ্য সংশোধন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে তা তদন্ত ও নিষ্পত্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা যাচাই–বাছাইয়ের পর বাদ পড়া সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের দায়ের করা দুই হাজারের বেশি রিট তদারক ইত্যাদি কাজ করে থাকে।

কিন্তু এত কাজ করার মতো প্রয়োজনীয় লোকবল নেই জামুকায়। জরুরি ভিত্তিতে লোকবল নিয়োগের বিষয়ে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত লোকবল ৩২ জন হলেও এখন অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে জামুকা জানিয়েছে, জামুকার সাংগঠনিক কাঠামোতে পরিচালকের পদ রয়েছে দুটি। এর একটি পদ এখন শূন্য। পাঁচ সহকারী পরিচালকের মধ্যে দুটি পদে কেউ নেই। দুজন উপপরিচালকের পদও শূন্য। অর্থাৎ পরিচালক থেকে উপপরিচালক পর্যায়ে ৯টি পদের ৫টিই ফাঁকা।

এরই মধ্যে রাজাকারদের তালিকা তৈরির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে জামুকাকে। সরকার পুরোনো আইন বাতিল দিয়ে নতুন করে জামুকা আইন করছে। সেখানেও রাজাকারদের তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে জামুকাকে।

লোকবল কম থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, লোকবল কম থাকায় একদিকে জামুকার ওপর অনেক চাপ যাচ্ছে। অন্যদিকে ভুলত্রুটি অনেক বেশি হচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিতেও সময় বেশি লাগছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এক বছর আগে লোকবল নিয়োগের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।’

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন করা হয়েছিল ২০০২ সালে। এই আইনে জামুকাকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি, সনদ ও প্রত্যয়নপত্র প্রদান এবং জাল সনদ ও প্রত্যয়নপত্র বাতিলে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠানোসহ বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অবশ্য জামুকার তৈরি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক আছে। এ ছাড়া রাজাকারদের তালিকা জামুকা করতে পারবে কি না, সেই সক্ষমতা প্রতিষ্ঠানটির আছে কি না—সেসব নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।