দেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু হয়েছে ১৯৬৫ সালে। এখনো ৩১ শতাংশ যক্ষ্মা রোগীকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। সরকারের একার পক্ষে যক্ষ্মা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তবে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের কাজে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সাসাকাওয়া মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যক্ষ্মাবিশেষজ্ঞ ও জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা এসব কথা বলেন। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা নিয়ে এ সভা আয়োজন করে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, আইসিডিডিআরবি ও স্টপ টিবি পার্টনারশিপ। সভায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যক্ষ্মাবিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক বলেন, যক্ষ্মা রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। এই সামাজিক আন্দোলনে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবার সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আয়োজকেরা বলেন, দেশে যক্ষ্মা বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা বেশি, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বছরে প্রায় ৪২ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় মারা যান। এত বড় রোগের বোঝা সরকারের একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।
মূল উপস্থাপনায় আইসিডিআরবির কারিগরি উপদেষ্টা মো. নাদিম রেজা বলেন, ৬০ শতাংশ চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানাধীন। ৮৪ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা নেন বেসরকারি খাতে। কিন্তু বেসরকারি খাতে যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয় ২৪ শতাংশ। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ চারটি—এ বিষয়ে নীতির ঘাটতি আছে, যক্ষ্মা নিয়ে তহবিল কম, বেসরকারি খাতের তথ্যে ঘাটতি এবং কাজ হচ্ছে ধীরগতিতে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, করপোরেট হাসপাতালগুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের (সিএসআর) অর্থ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে ব্যয় করতে পারে।
যক্ষ্মার সমস্যা মোকাবিলা যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে বলে মন্তব্য করেন ইউএসএআইডির জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচির উপপরিচালক মিরান্ডা বেকম্যান। তিনি বলেন, যক্ষ্মা বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সমস্যা। এত বড় সমস্যা সরকার একা সমাধান করতে পারবে না।
স্বাগত বক্তব্যে আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ও অনুষ্ঠানের সভাপতি তাহমিদ আহমেদ বলেন, দেশের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে আইসিডিডিআরবির গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। এর মধ্যে আছে যক্ষ্মা পরীক্ষাগার স্থাপন, জেলে যক্ষ্মার কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও জাতীয় যক্ষ্মা নজরদারি। আইসিডিডিআরবি এখন বেসরকারি খাতকে যুক্ত করার কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মো. মাহফুজুর রহমান, আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী সায়েরা বানু প্রমুখ বক্তব্য দেন।