সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন কেন কঠিন, জানালেন প্রতিমন্ত্রী

ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির পঞ্চম সভায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ অন্যরা। আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ২৫ জুলাই
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবুজ জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য সবার সমন্বিত ও সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সুনির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রচুর জমি লাগে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে বড় আকারে সোলার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা কঠিন।

ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্সের (আইএসএ) এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির পঞ্চম সভায় সভাপতির বক্তব্যে আজ মঙ্গলবার এসব কথা বলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহার রীতি একেক দেশে একেক রকম। প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার ও গবেষণার মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যেতে পারে।

নসরুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন, জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধিতে সরকার নানাবিধ নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সমন্বিত মহাপরিকল্পনা, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান, সোলার এনার্জি রোডম্যাপ, সোলার ইরিগেশনের রোডম্যাপ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি পলিসির আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সৌর সেচপাম্প, সৌর সড়কবাতি, সৌর খাওয়ার পানির ব্যবস্থা, সৌর মিনি গ্রিড, বারোমাস পরিকল্পনা, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ ইত্যাদিতে ব্যাপক কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৬০ লাখ সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে দুই কোটি লোককে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। যা ওই এলাকার লোকদের জীবনযাত্রার মান ও কমিউনিটির ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখছে। পরিচ্ছন্ন ও সবুজ জ্বালানির প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। যার জন্য ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চলে গেছে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করতে ও অন্যদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে অনুরোধ করেন তিনি।

২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১০৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যদিও নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আইএসএর এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক কমিটির পঞ্চম সভায় অংশ গ্রহণ করেছে। অপর দুই সদস্য হলো ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম সচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল। বাংলাদেশ আইএসএর ভাইস প্রেসিডেন্ট।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও অবকাঠামোবিষয়ক মন্ত্রী সোহাইল মোহামেদ আল মাঝরোই, আইএসএর মহাপরিচালক অজয় মাথুর প্রমুখ।