বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে শ্রম অধিকার, বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিবেশে দৃশ্যমান উদ্যোগ ও গুণগত পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চের নেতৃত্বে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির এই প্রশংসা করেন। প্রতিনিধিদলটি গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেখা করে।
বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল আশা প্রকাশ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্টের (টিকফা) পরবর্তী অধিবেশন আগামী বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে।
টিকফা বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়নের খাতসহ পারস্পরিক স্বার্থের জন্য সহযোগিতাকে আরও গভীর, শক্তিশালী ও বিস্তৃত করার বিষয়ে আলোচনা করবে।
পররাষ্ট্রসচিব প্রয়োজনীয় শ্রম সংস্কারের অগ্রগতির প্রসঙ্গটি তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থা (ডিএফসি) থেকে অর্থায়নের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, আইসিটি বিভাগ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে টিকফা-পূর্ব আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রসচিবকে সর্বশেষ বিবরণ তুলে ধরে।
এ সময় লিঞ্চ বাংলাদেশে একটি স্বচ্ছ, প্রত্যাশিত, স্থিতিশীল ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়ের পরিবেশ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য ইউএসটিআর অফিসের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলটি প্রয়োজনীয় সব শ্রম সংস্কার, মেধাস্বত্বের (আইপি) নিয়ন্ত্রণ এবং শুল্কের আধুনিকায়নে সহযোগিতা ও সমর্থন করার জন্য তাদের প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
লিঞ্চ জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল এবং ডিএফসি থেকে অর্থায়ন পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ১১ দফা শ্রম কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
পররাষ্ট্রসচিব বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে অংশীদারত্ব বজায় রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি অভ্যন্তরীণ শ্রম পরিবেশকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সমন্বয় করে এবং আরও বিদেশি বিনিয়োগের জন্য ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্রসচিব শ্রম খাতের সংস্কারের ক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতির পাশাপাশি পোশাকশ্রমিকদের বার্ষিক ৯ শতাংশ হারে মজুরি বৃদ্ধি, ১৮ দফা শ্রম চুক্তি বাস্তবায়ন এবং ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন সংশোধনের লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করতে প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংস্কার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।