গতকাল শনিবার রাতে ট্যাংকার সোফিয়াতে অগ্নিকাণ্ড।  কাছাকাছি থাকা অন্য জাহাজ থেকে তোলা ছবি
গতকাল শনিবার রাতে ট্যাংকার সোফিয়াতে অগ্নিকাণ্ড।  কাছাকাছি থাকা অন্য জাহাজ থেকে তোলা ছবি

কুতুবদিয়ায় দুই এলপিজি ট্যাংকারে আগুন, উদ্ধার ৩১

কুতুবদিয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে  এলপিজির দুটি ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বিদেশি পতাকাবাহী বড় এলপিজি ট্যাংকারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও দেশীয় ছোট ট্যাংকারের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন লাগার পর ছোট ট্যাংকারের নাবিক ও কর্মীদের উদ্ধার করা হয়েছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন এলপিজি সোফিয়া ট্যাংকার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্যাংকারটিতে এলপিজি গ্যাস বোঝাই ছিল। তবে এলপিজি নিয়ে আসা তানজানিয়ার পতাকাবাহী বড় ট্যাংকার ক্যাপ্টেন নিকোলাস নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

বন্দর ও কোস্টগার্ড জানায়, অগ্নিকাণ্ডের পর সোফিয়া ট্যাংকারের ১৮ জন নাবিক, দুজন মুরিং ম্যান, তিনজন পাহারাদার এবং ক্যাপ্টেন নিকোলাস থেকে সাগরে ঝাঁপ দেওয়া আটজন পাহারাদারকে উদ্ধার করা হয়েছে। সোফিয়াতে থাকা উদ্ধার করা নাবিকদের মধ্যে ৯ জন বাংলাদেশি, আটজন ইন্দোনেশিয় এবং একজন ভারতীয়।

বন্দর, কোস্টগার্ড ও ট্যাংকারের স্থানীয় এজেন্টে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার পর আগুনের ঘটনা ঘটে। এলপিজিবাহী ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ ট্যাংকার থেকে ছোট ট্যাংকার ‘এলপিজি সোফিয়া’তে গ্যাস স্থানান্তর করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।  

ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট সি ওয়েভ মেরিন সার্ভিসেসের কর্ণধার মো. সামিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাপ্টেন নিকোলাস থেকে সোফিয়া ট্যাংকারে ৩ হাজার ৩৫০ টন এলপিজি স্থানান্তর করা হচ্ছিল। গ্যাস স্থানান্তর করার একপর্যায়ে সোফিয়ার ডেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর ক্যাপ্টেন নিকোলাসের ডেকে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ট্যাংকারটির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ সময় রশি ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে সোফিয়া ট্যাংকারটি দূরে সরে যায়। এ কারণে ক্যাপ্টেন নিকোলাস ট্যাংকারটিতে থাকা প্রায় ৩৬ হাজার টনের বেশি এলপিজি অক্ষত রয়েছে। দুর্ঘটনার পর সোফিয়ার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও বন্দরের অগ্নিনির্বাপণ জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আগুন নেভাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দরের অগ্নিনির্বাপক জলযান কাজ করছে। সোফিয়া ট্যাংকারের আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে গ্যাস থাকায় সোফিয়া ট্যাংকারে থেমে থেমে আগুন জ্বলছে। ট্যাংকারে থাকা নাবিক-কর্মী সবাই উদ্ধার হয়েছেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যে দেখা যায়, ক্যাপ্টেন নিকোলাস ট্যাংকারে করে মোট ৪২ হাজার ৯২৫ টন এলপিজি বা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস আমদানি করেছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একটি ট্যাংকারে গত পরশু ৩ হাজার ২৫০ টন এলপিজি স্থানান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় স্থানান্তর করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটল।

সংশোধনী

১৩ অক্টোবর প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত ‘কুতুবদিয়ায় দুই এলপিজি ট্যাংকারে আগুন, উদ্ধার ৩১’ শিরোনামে সংবাদে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ সোফিয়াকে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপ ১৪ অক্টোবর এক চিঠিতে জানিয়েছে, ট্যাংকারটি বসুন্ধরার মালিকানাধীন নয়। তবে বসুন্ধরার ভাড়া নেওয়া ট্যাংকার।