অস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নের সময় বাড়ল

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে সারা দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়নের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই সময়সীমা বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে ২০২৩ সালের লাইসেন্স নবায়নের জন্য এই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। কারণ হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারি আসন্ন সংসদ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। ‘আগ্নেয়াস্ত্ররে লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা, ২০১৬’ অনুযায়ী প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্যভান্ডার ফায়ার আর্মস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এফএএমএস) গত অক্টোবরের তথ্য বলছে, দেশে বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ৫০ হাজার ৩১০। ৪৫ হাজার ২২৬টি অস্ত্র ব্যক্তির হাতে এবং ৫ হাজার ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে।

ব্যক্তির কাছে থাকা অস্ত্রের মধ্যে রাজনীতিবিদদের হাতে আছে ১০ হাজার ২১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে আছে ৭ হাজার ৫৪৯টি আগ্নেয়াস্ত্র। আর বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে আছে ২ হাজার ৫৮৭টি। জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে আছে ৭৯টি।

পুলিশের বিশেষ শাখার ২০২১ সালের ডিসেম্বরের হিসাব বলছে, তখন বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ১০৪। ফলে দেখা যাচ্ছে, দুই বছরে দেশে বৈধ অস্ত্র বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার ২০৬টি।

সবচেয়ে বেশি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১১ হাজার ৮৯৮টি। চট্টগ্রামে ৬ হাজার ৫১২, রাজশাহীতে ৮ হাজার ৩২১, সিলেটে ৪ হাজার ৭৫৭, খুলনায় ৭ হাজার ৪৭৯, রংপুরে ৩ হাজার ৫৯৭, ময়মনসিংহে ২ হাজার ১১৮ ও বরিশালে ২ হাজার ৬৮২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। লাইসেন্স করা এসব আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে পিস্তল, রিভলবার, একনলা ও দুনলা বন্দুক, শর্টগান ও রাইফেল রয়েছে।

দেশের কোনো নাগরিক জীবনের ঝুঁকি থাকলেই কেবল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। বয়স হতে হয় ২৫ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। কিন্তু অভিযোগ আছে, এখন রাজনৈতিক বিবেচনায় অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। সেই অস্ত্র বিরোধীদের ভয়ভীতি দেখাতে ব্যবহৃত হয়।

সাধারণত জাতীয় নির্বাচনের আগে বৈধ অস্ত্র থানায় জমা নেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি পুলিশ অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায়।