বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর আনসার সদস্যদের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছে তারা।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত।
সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আল–আমিন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম নছরুল কাদির স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার দুপুরে এই দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতা–কর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। স্বৈরাচারের পতন হলেও প্রশাসনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারের দোসর ও প্রেতাত্মা এখন রয়ে গেছে। এসব চক্রান্তকারী ও স্বৈরাচারের দোসরেরা মনে করে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে দেশে প্রতিবিপ্লব ঘটাবে। রোববার রাতে আনসার বাহিনীর কর্মকাণ্ডে তেমনটিই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গোটা দেশের মানুষ যেখানে বন্যার্তদের সহায়তায় ব্যস্ত, সেখানে আনসার বাহিনী কী করে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে, ত্রাণবাহী গাড়ি বন্ধ রেখে কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে?’
হামলাকারীদের বিচার দাবি করে সংগঠনটি বলেছে, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হবে যারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য কাজ করেছে, তাদের অবিলম্বে সরিয়ে দক্ষদের পদায়ন করা। গতকালও আনসাররা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর বুট দিয়ে লাথি মেরে শরীর থেঁতলে দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।’
নিজেদের চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা কয়েক দিন ধরে ঢাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। রোববার তাঁরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান। ঘেরাও করে রাখায় সচিবালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছিলেন না। দিনভর রাজধানীতে ছিল ব্যাপক যানজট।
সচিবালয়ে আনসার সদস্যরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রেখেছেন, রাতে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তাঁরা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী আহত হন। এ সময় কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। আহত হন প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক আসিফ হাওলাদারও।