ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাব মোকাবিলায় বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আবার বন্দর থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রমও গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্দরের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, কনটেইনার ও অন্যান্য স্থাপনা সুরক্ষিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় আজ মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করে। আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলার পর এই সতর্কতা জারি করা হয়।
বন্দরের ‘অ্যালার্ট-৩’ জারির পর নিয়ম অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে হয়। জেটি থেকে সব জাহাজ সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঝড়ের সময় প্রচণ্ড বাতাস ও ঢেউয়ের তোড়ে জাহাজের ধাক্কায় জেটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে আজ মঙ্গলবার পৌনে আটটার দিকে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, জোয়ারের সময় ২২টি জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি ছিল। রাত আটটার মধ্যে ১৮টি জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চারটি জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। নতুন করে বন্দর চত্বর থেকে পণ্য খালাসের কোনো কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। যেসব চালানের পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়েছিল, সেগুলোই খালাস হচ্ছে।
১৯৯২ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রণীত ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগ প্রস্তুতি ও ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত অনুসারে চার ধরনের সতর্কতা জারি করে বন্দর।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর প্রথম পর্যায়ের সতর্কতা বা ‘অ্যালার্ট-১’ জারি করে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ৪ নম্বর সংকেত জারি করলে বন্দর ‘অ্যালার্ট-২’ জারি করে।
বিপৎসংকেত ৫, ৬ ও ৭ নম্বরের জন্য বন্দরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করা হয়। মহাবিপৎসংকেত ৮, ৯ ও ১০ হলে বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৪’ জারি করা হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ ১২ নম্বর বুলেটিন বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে কিছুটা দুর্বল হয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের উপকূলের ১৮০ থেকে ২৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঝড়টি আজ রাতের মধ্যে বাংলাদেশের ভূখণ্ড অতিক্রম করে যেতে পারে।