পাপকে ঘৃণা করে মানুষকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ রেখে সম্প্রীতির জীবন সুখী হোক—বড়দিনের প্রার্থনায় এমন বার্তাই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শুভ বড়দিন। সকালের প্রার্থনায় গির্জায় গির্জায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শান্তির বার্তা।
আজ উদ্যাপিত হচ্ছে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন (ক্রিসমাস ডে)। সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রানীর গির্জার প্রার্থনায় যোগ দেন আর্চ বিশপ বিজয় নিসফরাস ডি’ক্রুজ।
প্রার্থনা পর্ব শেষে বিশপ বিজয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘যিশুখ্রিষ্ট এসেছিলেন শান্তিরাজ হিসেবে। জগতে শান্তি, মুক্তি ও মানুষের সম্মান–মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন, পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করতে; আমরা যাতে একে অপরকে ভালোবাসি, একে অপরকে ক্ষমা করি এবং মানুষকে ভালোবাসার বন্ধনে একত্র করি। বড়দিনে প্রার্থনা করি, এই বিশ্ব শান্তিতে ভরে উঠুক; মানুষ যাতে সম্প্রীতির মধ্যে জীবন যাপন করতে পারে এবং জগতের সব মানুষ সুখে বসবাস করুক।’
সকালে গির্জা প্রাঙ্গণ ভরে উঠেছিল প্রার্থনায় অংশ নিতে আসা মানুষদের পদচারণে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শিশু–কিশোর, তরুণ–তরুণী, বয়স্ক, অর্থাৎ সব বয়সী মানুষ এতে অংশ নেন।
গির্জার ফাদার জয়ন্ত এস গোমেজের সঙ্গে এসব মানুষও প্রার্থনার বাণী পড়েন। ফাদার তাঁর প্রার্থনার একপর্যায়ে বলেন, মানুষ যেন পাপ থেকে মুক্ত থাকে এবং শান্তি সর্বদা মর্ত্যে বিরাজ করে।
প্রার্থনার ফাঁকে ফাঁকে ছিল দলীয় সংগীত পরিবেশনা। তেজগাঁওয়ের এই গির্জায় আজ সকালে দুটি প্রার্থান অনুষ্ঠান হয়, যাকে বলা হয় খ্রিষ্টযাগ।
মহাখালী থেকে সন্তানদের নিয়ে প্রার্থনায় যোগ দিতে আসেন অঞ্জনা রোজারিও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক মাস আগে থেকেই তাঁরা বড়দিনের প্রস্তুতি শুরু করেন। আর মূল আয়োজন সপ্তাহখানেক ধরে চলে। বড়দিনের আগের রাতে পিঠা ও কেক বানানোর প্রস্তুতি চলে।
অঞ্জনা আরও বলেন, মেয়েরা বড় হওয়ার পর সবাই মিলে এই পিঠা ও কেক তৈরি করেন। এবার তিন পদের পিঠা ও দুটি কেক বানিয়েছেন তাঁরা। আজ সারা দিন স্বজনদের বাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা ঘোরাঘুরি করবেন।
সকালের প্রার্থনা পর্ব শেষে বেলা একটায় গির্জার গেট বন্ধ করা হবে। আবার বেলা তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সবার জন্য গির্জা উন্মুক্ত থাকবে।