মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অপরাধে কারাদণ্ডের পরিবর্তে প্রস্তাবিত আইনে শুধু জরিমানার বিধান।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কঠোর সাজা নতুন আইনে থাকছে না, অনেক ক্ষেত্রে সাজার পরিমাণও কমছে।
অজামিনযোগ্য ধারা কমিয়ে নতুন আইনে জামিনযোগ্য ধারা বৃদ্ধি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামে দেশে কোনো আইন আর থাকছে না। দেশ–বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে বিতর্কিত এই আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এত দিন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো বহাল থাকবে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে পৃথকভাবে নতুন আইন করার সিদ্ধান্তের কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কঠোর সাজা থাকছে না, সাজার পরিমাণ অনেক ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে থাকা অজামিনযোগ্য ধারা কমিয়ে নতুন আইনে জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়েছে।
মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনে’ তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন মানহানির অপরাধে শুধু জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে জরিমানার পরিমাণ আগের চেয়ে (ডিজিটাল আইনে যা আছে) বাড়ানো হয়েছে।
সম্পাদক পরিষদসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের আপত্তি ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সরকার একরতফাভাবে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে। শুরু থেকেই এই আইন নিয়ে সাংবাদিকদের পাশাপাশি দেশি–বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও তাদের উদ্বেগের কথা বলে আসছিল। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকেও এই আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বেশ কয়েকবার আপত্তি তোলা হয়েছিল।
ভিন্নমত দমন, ভয় দেখানো, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা এবং গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের ক্ষেত্রে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে—আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও এমন অভিযোগ করেছে বিভিন্ন সময়। বাস্তবেও দেখা যায়, এই আইন প্রয়োগের শুরু থেকেই অপপ্রয়োগের অভিযোগ উঠতে থাকে। একপর্যায়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রী স্বীকার করেন, কিছু ক্ষেত্রে এই আইনের অপব্যবহার হয়েছে। আইনটি পাসের পর তা সংশোধনের দাবিতে ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদ মানববন্ধন করেছিল। তারা এই আইনের নয়টি ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিরোধী উল্লেখ করে তা সংশোধনের দাবি করেছিল।
২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা ১ হাজার ২৯৫টি মামলার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)। তাতে উঠে এসেছে, ২৭ দশমিক ৪১ শতাংশ মামলা হয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। এই আইনের সমালোচনা করে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যরা একাধিবার বলেছেন, ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সরকার এই আইন করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ডিজিটাল আতঙ্কে পরিণত হয়েছে, এমন মন্তব্যও করেছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমরা বাতিল করছি না। এই আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে নতুন আইন করছি।আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর থেকে সরকারকে এই আইন সংশোধন করার জন্য কিছু সুপারিশসহ চিঠিও দিয়েছিল চলতি বছরের ৩১ মার্চ। একই সঙ্গে আইনটি স্থগিত করতে বলেছিল তারা। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
জাতীয় সংসদে গত জুন মাসে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক লিখিত প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, আইনটি পাসের পর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ১টি মামলা হয়েছে। তখন তিনি আইন সংশোধন করা হবে, এমন আশ্বাসও দিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি বলেছেন, আইনটি সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধন করা হবে। এখন সংশোধন নয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ নামে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
গতকাল সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এতই পরিবর্তন আনা হচ্ছে যে এটিকে রহিত করে তার জায়গায় সাইবার নিরাপত্তা আইন আসছে।
প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে ৬০টি ধারায় অপরাধ, সাজাসহ বিভিন্ন বিষয় বিন্যস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, সাইবার নিরাপত্তার জন্য যেসব ধারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ছিল, সেই ধারাগুলো প্রস্তাবিত আইনে অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। তবে অনেকগুলো ধারা, যেমন মানহানির ধারায় আগে শাস্তি ছিল কারাদণ্ড। প্রস্তাবিত আইনে সেটি পরিবর্তন করে করা হয়েছে জরিমানা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় মানহানির বিষয়টি রয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করলে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে।
প্রস্তাবিত নতুন আইনে এই অপরাধের জন্য কারাদণ্ড বাদ দিয়ে জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখন এই অপরাধের জন্য অনধিক ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, জরিমানা না দিলে তিন মাস থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। কিন্তু অপরাধের মূল শাস্তি হলো জরিমানা।
বিভিন্ন অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি কমানো হয়েছে বলেও জানান আইনমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা-২১-এর কথা উল্লেখ করেন।
এই ধারায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার জন্য দণ্ডের বিধান রয়েছে। এই অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান আছে।
প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনে এই সাজা কমিয়ে সাত বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেক ধারায় দ্বিতীয়বার অপরাধের জন্য সাজা দ্বিগুণ বা সাজা বাড়ানো ছিল। প্রস্তাবিত আইনে প্রতিটি ধারায় যেখানে দ্বিতীয়বার অপরাধের ক্ষেত্রে বাড়তি সাজার কথা আছে, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার বা বারবার অপরাধ করলেও একই সাজা হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা–২৮ ধারা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। এই ধারায় ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাতসংক্রান্ত বিষয় রয়েছে। এ–সংক্রান্ত অপরাধে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হবে। আর এই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সাজা আরও বেশি হবে। প্রস্তাবিত আইনে এটি জামিনযোগ্য করা হয়েছে (আগে অজামিনযোগ্য ছিল) এবং সাজা কমানো হয়েছে। এখন এই অপরাধে সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছর।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারাও পরিবর্তন করা হচ্ছে প্রস্তাবিত আইনে। এই ধারায় বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো বা ঘটার উপক্রম–সংক্রান্ত অপরাধের কথা রয়েছে। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে এই সাজা কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনার মুখে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী মাসেই বিল সংসদে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এটি কমিয়ে সাত বছর করা হয়েছে।
হ্যাকিংয়ের জন্য অনধিক ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান আগের মতোই থাকছে। সাইবার অপরাধসংক্রান্ত কারিগরি বিষয়ের অপরাধের ক্ষেত্রে আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি বলে জানান আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত আইনে অনেকগুলো ধারাকে জামিনযোগ্য করা হয়েছে, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অজামিনযোগ্য ছিল।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত জানাতে গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৬ ধারাগুলো অজামিনযোগ্য রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে এসব ধারা জামিনযোগ্য থাকবে।
মাহবুব হোসেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশের অপরাধে এখন সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। সেটি কমিয়ে তিন বছর করা হয়েছে। এটি আগে অজামিনযোগ্য ছিল। এখন জামিনযোগ্য করা হচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রস্তাবিত আইনে গণমাধ্যমের জন্য আলাদা কোনো বিধান রাখা হয়নি। কবে নাগাদ নতুন আইনটি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদের অধিবেশন বসবে, সেই অধিবেশনে বিলটি সংসদে পেশ করা হবে। আইনটি পাস হলে চলমান মামলাগুলো স্বাভাবিকভাবে সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে যাবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আমরা বাতিল করছি না। এই আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে নতুন আইন করছি। নতুন আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রায় সব বিধানই থাকছে। এর মধ্যে অপপ্রয়োগের সুযোগ আছে, এমন বিধান সংশোধন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাইবার জগতের ব্যাপ্তি অনেক বড়। ডিজিটাল বিষয়টা সাইবার জগতের সঙ্গে খাপ খায় না। আর গোটা বিশ্বে সাইবার নিরাপত্তা নামেই আইন আছে। সে জন্য আমরা সাইবার নিরাপত্তা আইন করছি।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের সিদ্ধান্তকে ‘সতর্ক সাধুবাদ’ জানিয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা, আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা। তবে তারা এটিও বলেছে, সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইন নামে নতুন যে আইন আসছে, তাতে যেন আগের আইনের দমনমূলক বৈশিষ্ট্যগুলো ফিরিয়ে আনা না হয়। এ ছাড়া আইনটি যাতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের অধিকারের জায়গাকে সংকুচিত না করে। একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন যাঁরা কারাবন্দী, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি ও মামলা বাতিলের দাবি উঠেছে। পাশাপাশি এই আইনে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি উঠেছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নতুন আইনের (সাইবার নিরাপত্তা আইন) খসড়াটি এখনো দেখিনি। কিন্তু আইনমন্ত্রী বলেছেন, জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়েছে। দেখতে চাই আমরা কতগুলো ধারা (জামিনযোগ্য) বাড়াতে বলেছিলাম, আর তাঁরা কতটুকু বাড়িয়েছেন। সরকার বলছে, সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হবে না, জরিমানা করা হবে। জরিমানার পরিমাণটা কত, সেটি দেখতে হবে। আরও দেখতে হবে যে বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা অত পরিমাণ জরিমানা দিতে পারবেন কি না। নতুন আইন প্রয়োগের ক্ষমতা কাদের দেওয়া হবে, সেটিও দেখতে চাই। এসব যদি পরিবর্তন করা না হয়, তাহলে কয়েকটি ধারা পরিবর্তন করলে আমাদের যে উদ্বেগ, সেগুলো প্রশমিত হবে না।’
সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে বিল আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে তোলা হবে, তার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে, বিশেষ করে সম্পাদক, সাংবাদিক, সাংবাদিকতার শিক্ষক, আইনজীবীদের সঙ্গে সরকার কথা বলবে—এমনটি প্রত্যাশা করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল।