ফেনী-২ (সদর) আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ধরনের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। জসিম উদ্দিন নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে উপকমিশনার (ডেভেলপমেন্ট) পদে কর্মরত রয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এভাবে কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না, যা আচরণবিধি লঙ্ঘন। তবে সংসদ সদস্য প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারী এই ছবি দুই মাস আগের বলে দাবি করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৫ ডিসেম্বর ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড জাহানপুর গ্রামে প্রচারণা চালাতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারী। সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা–কর্মীদের পাশাপাশি ফুলের মালা পরা পুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে দেখা গেছে। তাঁর গ্রামের বাড়িও জাহানপুর গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজাম হাজারী তাঁর গলা থেকে ফুলের মালা খুলে পুলিশ কর্মকর্তা জসিমকে পরিয়ে দেন। পরে তিনিসহ প্রচারণায় অংশ নেন। পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য জিয়া উদ্দিনও ছিলেন। জানতে চাইলে গতকাল রাতে জিয়া উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ছবিটি এক বছর আগের। ইতিমধ্যে তাঁর ভাই (পুলিশ কর্মকর্তা) গ্রামের বাড়িতে আসেননি।
নির্বাচনী প্রচারণায় পুলিশ কর্মকর্তাকে ফুলের মালা পরিয়ে দিয়ে একসঙ্গে প্রচারণা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী-২ (সদর) আসনের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী আজ রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে পুলিশ কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ির মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম। ছবিটি এখনকার নয়। মাস দুয়েক আগের।’ ছবিতে পোস্টার টাঙানো রয়েছে এবং ২৫ ডিসেম্বরের প্রচারণার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার অতি উৎসাহী কিছু লোক পোস্টারগুলো অনেক আগে টাঙিয়ে দিয়েছে।’
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার জসিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে তাঁকে খুদে বার্তা দেওয়া হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এসপি পদমর্যাদার সরকারি কর্মকর্তা হয়ে প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে আজ রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) খ. মহিদ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নলেজে নেই।’ অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। পরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) এ কে এম হাফিজ আক্তারের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।
একই বিষয়ে ফেনী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই রকম কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি।’