রাজধানীর পল্টন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
রাজধানীর পল্টন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

কোটা সংস্কার আন্দোলন

নিহতদের তালিকা প্রকাশের দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের

কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হামলা–সংঘর্ষে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের তালিকা জাতির সামনে তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। পাশাপাশি এ ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের নামও প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ বুধবার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এই আহ্বান জানান। পাশাপাশি হত্যার বিচার, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুক্তি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, কারফিউ প্রত্যাহার ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ব্যর্থতার দায়ে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নিহত ও কয়েক হাজার মানুষের আহত হওয়ার খবর নানা মাধ্যমে এসেছে। তাঁদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতি-লুটপাটের খবর চাপা পড়ে যাচ্ছে। মানুষের একদিকে আয় কমে গেছে, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উন্মুক্ত করা হয়নি। প্রচারমাধ্যমে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা চলছে।

এদিকে চলমান আন্দোলনে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের স্মরণে আগামী শুক্রবার দেশব্যাপী শোক র‌্যালি করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা। আজ এক বিবৃতিতে তারা এই তথ্য জানিয়েছে। এই কর্মসূচি সফল করতে সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও গণতন্ত্রমনা ছাত্র-জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।

মহিলা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেছে তারা।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টকারী ব্যক্তিদের যথাযথভাবে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। পাশাপাশি বিবৃতিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নারী কোটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, যা জাতীয় অগ্রযাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

জনজীবন স্বাভাবিক করতে অবিলম্বে কারফিউ ও সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানায় দলটি।

বাসদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সমন্বয়ক মাসুদ রানা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই সরকারের দমন–পীড়নের স্বীকার হয়। সরকারের শীর্ষ মহলের বক্তব্যে তা প্রমাণিত। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালায়। প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার পাশাপাশি ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্দোলনকারী ব্যক্তিদের নির্মমভাবে দমন করার চেষ্টা সরকারের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করেছে। আন্দোলন ঘিরে হত্যার দায় সরকারের। এই দায় স্বীকার করে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।