আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশে কোনো অঘটন ঘটালে আওয়ামী লীগ ছাড় দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। সোমবার বিকেলে নগরে আওয়ামী লীগের এক বিক্ষোভ সমাবেশ এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির দেশব্যাপী সমাবেশে আওয়ামী লীগ নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, ‘রাজশাহীতে আগামী ৩ তারিখে বিএনপির সমাবেশ রয়েছে। আপনারা রাজশাহীতে কোনো অঘটন ঘটান, কোনো বাহাদুরি করতে যান, তাহলে আপনাদের হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি, যাঁরা নেতৃত্ব দেন, আপনাদের বাড়ি কিন্তু রাজশাহীতে। আমরাও কিন্তু রাজশাহীতেই থাকি।
খুব সাবধানে বুঝেশুনে পা ফেলবেন, তা না হলে পা কিন্তু কাটা পড়তে পারে।’
রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক। সঞ্চালনা করেন রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এফ এম এ জাহিদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সোহেল, উপদপ্তর সম্পাদক পঙ্কজ দে, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুল মমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন প্রমুখ।
সমাবেশের আগে নগরের সিঅ্যান্ডবি মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে লক্ষ্মীপুর মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন নেতারা।
সমাবেশের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি সমাবেশ করুক, এটায় কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খলা তাঁরা বরদাশত করবেন না। তারা আসতে চায়, আসুক। যেখানে অনুমতি পাবে, সেই জায়গার মধ্যে সমাবেশ করুক।
অশালীন, অরাজনৈতিক কথা যেন তারা না বলে। এটি বললে তাদের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হতে পারেন এবং সে ক্ষেত্রে তাঁর দায়দায়িত্ব তাঁরা নেবেন না। ভাঙচুর, জানমালের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা কোনো বাজে বুদ্ধি যদি তাদের মধ্যে থাকে, সেগুলো তারা যেন পরিহার করে। তা না হলে তাঁরা ধরেই নেবেন, তারা (বিএনপি) পায়ে পা দিয়ে লড়াই করতে চায়। সে ক্ষেত্রে তাঁরা ছেড়ে কথা বলবেন না।
রাজশাহীতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়ে খায়রুজ্জামান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ককটেল রেখে আসবে, আওয়ামী লীগ এত দুর্বলও হয়নি, আর দেউলিয়াও হয়নি। এটা তাদেরই কাজ। আওয়ামী লীগ তাদের রাজপথেই মোকাবিলা করবে। তারা (বিএনপি) ককটেলের মাধ্যমে গন্ডগোল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এগুলোর মোকাবিলা করবে আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে।’ আওয়ামী লীগের অবস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের কী ধরনের অবস্থান থাকবে, সেটি এখন বলা যাবে না। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন থানা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করছে। আগামী ১ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরজুড়ে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের বিক্ষোভ মিছিল করবে।
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ বিষয়ে রাজশাহী সিটি মেয়র বলেন, ‘বিএনপি নয়াপল্টনে তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চাচ্ছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান দেওয়ার পরও তারা সেটি গ্রহণ করতে চাচ্ছে না। তারা বলছে, “১০ তারিখেই আখেরি লড়াই এবং এই লড়াইয়ের পরে তাদের কথামতো দেশ চলবে।”
এগুলো আমরা মনে করি “কুঁজোর চিত হয়ে শোয়া বা ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা”—এ রকম বিষয়। যেটা তাদের সক্ষমতা নেই, সামর্থ্য নেই, অতীতে কোনো দিন করে দেখাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। ১০ ডিসেম্বরেও পারবে না।’