তিন সপ্তাহে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ, ফিফার দেওয়া অর্থ নিয়ে অনিয়ম অনুসন্ধানে স্থিতাবস্থা থাকছে

সুপ্রিম কোর্ট
 প্রথম আলো ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধান নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রুল তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি বাফুফেতে ফুটবলের বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষ ফিফার দেওয়া অর্থ নিয়ে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধানে স্থিতাবস্থা বহাল রাখা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ রোববার এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর করা লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়।

আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী শুনানিতে ছিলেন। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী মুরাদ রেজা ও দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন।

হাইকোর্ট বাফুফে ফিফা ও সরকারের দেওয়া অর্থ নিয়ে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ জুন চেম্বার আদালত ফিফার দেওয়া অর্থ নিয়ে অনিয়ম অনুসন্ধান স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। এ স্থিতাবস্থা বহাল রেখে আপিল বিভাগ এ–সংক্রান্ত রুল তিন সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাফুফেকে সরকারের দেওয়া অর্থ নিয়ে অনিয়মের অনুসন্ধান করছে দুদক।’ আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পরপরই এ-সংক্রান্ত রুল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে গত মে মাসে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন)। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৫ মে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।

রুলে কাজী সালাউদ্দিন, আবদুস সালাম মুর্শেদী, আবু নাঈমসহ বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা/ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

হাইকোর্ট বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে ফিফা ও সরকারের দেওয়া অর্থ নিয়ে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে যুব ও ক্রীড়াসচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এবিআর) চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। চার মাসের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৭ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশনা স্থগিত চেয়ে বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর নাম উল্লেখ করে গত ২২ জুন আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়। আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ২৫ জুন শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের নাম আবেদন থেকে প্রত্যাহারের আরজি জানান তাঁর আইনজীবী।

আদালত তা মঞ্জুর করেন। বাফুফে ফিফার দেওয়া অর্থ নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়ে চেম্বার আদালত সেদিন লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ৯ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ আবেদনটি কার্যতালিকায় ওঠে।