বাবার চাকরির সূত্রে দীর্ঘ সময় ধরে মোহসিনা কবির কক্সবাজারে থাকেন। আগামী শুক্রবার ঢাকায় তাঁর একটি চাকরির পরীক্ষা আছে। কিন্তু তিনি এক সপ্তাহ আগেই চলে এসেছেন। কারণ, তিনি কক্সবাজার থেকে প্রথমবারের মতো ঢাকায় ছেড়ে আসা ট্রেনের যাত্রী হতে চেয়েছেন।
আজ শুক্রবার প্রথমবারের মতো কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এল কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন। রাত ৯টায় ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে পৌঁছে। এরপর যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ট্রেন থেকে নেমে মোহসিনা কবির প্রথম আলোকে বলেন, তিনি যখন ট্রেনের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন, তখন কয়েকজন তাঁর সঙ্গে স্টেশন পর্যন্ত আসেন। কারণ, তাঁরা এর আগে সামনাসামনি ট্রেন দেখেননি।
এমন একটি মুহূর্তের সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত মোহসিনা কবির। তিনি বলেন, ‘যখন থেকে শুনছি, কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ট্রেন আসবে। আমরা শুধু বলছিলাম, সেই দিন আসে না কেন।’
কক্সবাজার থেকে ঢাকার যোগাযোগ এখন সহজ ও আরামদায়ক হয়ে গেল উল্লেখ করে মোহসিনা বলেন, ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন–সংযোগ দরকার ছিল। এই ট্রেন কক্সবাজারবাসীর জন্য অনেক কিছু। এখন চাইলেই তাঁরা ঢাকায় সহজে আসতে পারবেন।
৪৮০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো ট্রেনের যাত্রা। দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে সৈকত শহর কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন থেকে ১ হাজার ২০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে ২০ বগির ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’।
এ ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করেন রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়ায় ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত হয় ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন ছয় তলাবিশিষ্ট এই আইকনিক রেলস্টেশন। গত ১১ নভেম্বর দুপুরে ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের আইকনিক রেলস্টেশনসহ ১০১ কিলোমিটারের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।