মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজে তরুণদের ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
মনোনয়ন কিনতে শতকোটি টাকা ব্যয় হয় উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘মনোনয়ন-বাণিজ্য যখন হয়, তখন রাজনীতিটা ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়। কোনো আইন করে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা যদি গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাই, পরিস্থিতির পরিবর্তন চাই, তাহলে আমাদের ও আমাদের রাজনীতিবিদদের মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে হবে। বিশেষ করে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যদি পরিবর্তন আসে, তাহলেই এর পরিবর্তন আসবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য কোন পথে’ শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে বদিউল আলম মজুমদার এ কথা বলেন। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই জাতীয় সংলাপের আজ ছিল প্রথম দিন। এ সংলাপের আয়োজক ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস)।
সংলাপের প্রথম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বদিউল আলম মজুমদার তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘একটা রাষ্ট্রে নাগরিকের চেয়ে বড় কোনো পদ নেই। তোমরা তরুণেরা কি সে রকম দায়িত্ব নিতে পারবা? মুগ্ধ যেমন জীবন দিয়েছে, আবু সাঈদরা যেমন বুক পেতে দিয়েছে, তোমরা কি মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে যেসব সংস্কারগুলো অবশ্যম্ভাবী, সেগুলোর জন্য তোমরা কি এগিয়ে আসতে পারবা? তোমরা কি সে রকম বুক পেতে দিতে পারবা?’ তাঁর এসব প্রশ্নের উত্তরে মিলনায়তনে উপস্থিত তরুণদের অনেকে হ্যাঁ বলে সায় দেন।
গণ–অভ্যুত্থানে মুগ্ধ-সাঈদদের অবদান তুলে ধরে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘কয়েক মাস আগে এ রকম একটা অনুষ্ঠান আমরা করতে পারতাম না। আজকে সেই সুযোগ পেয়েছি। এটা মনে রাখতে হবে। এই অধিকার যেন ক্ষুণ্ন না হয়। ...এত মানুষের আত্মত্যাগ আমাদের দায়বদ্ধ করে গেল! সেই দায় শোধ করা আমাদের দায়িত্ব। তার জন্য একতা, সংস্কার ও সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা দরকার।’
এ সময় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বদিউল আলম বলেন, ‘যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, আমি তাঁদের উপকারভোগী। আজকে যদি হাসিনা না পালাত, বিতাড়িত না হতো, আমি হয়তো বেঁচে থাকতাম না। আমাকে বলা হয়েছিল, আমরা কয়েকজন চিহ্নিত। সেই রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবর্তন করতে হবে, পদ্ধতি-প্রক্রিয়ার পরিবর্তন করতে হবে এবং সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন লাগবে। এটা আকাশ থেকে মেওয়া ফল হিসেবে পড়বে না। এই সমাধান সবাই মিলে করতে হবে।’