মস্কোয় নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার জাহাজগুলো বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তাঁকে তলব করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ পণ্যবাহী রাশিয়ার জাহাজ দেশটির বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে যে খবর এসেছে, সে বিষয়ে দেশটির কূটনৈতিক মিশনের প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ চরিত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতার সম্ভাবনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ঢাকা ও মস্কোর কূটনৈতিক সূত্রগুলোও রাশিয়ায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে গত সপ্তাহে ঢাকায় নিয়োজিত রুশ রাষ্ট্রদূত তাদের নিশ্চিত করেছেন।
গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে দেশটির মালিকানাধীন অনেক জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো।
এদিকে রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে কাজ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটম। ২০২৪ সালে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের নানা সরঞ্জাম রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। রাশিয়ার জাহাজের ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব পণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে গত ডিসেম্বরে রাশিয়ার একটি জাহাজের মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে সেই জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বিষয়টি যাচাই করার পর বাংলাদেশ জাহাজটিকে বন্দরে ভিড়তে নিষেধ করে। পরে জাহাজটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে যায়। সেখানেও ভেড়ার অনুমতি না পেয়ে জাহাজটি রাশিয়ায় ফিরে যায়।