আশ্বিনের সকালে কথা, কবিতা, গানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শরৎ উৎসব উদ্যাপন করা হয়েছে। উৎসবে সত্য, সুন্দরের প্রত্যাশা নিয়ে শিল্পীরা গেয়েছেন সম্প্রীতির গান৷ নৃত্যশিল্পীদের নাচে ছিল প্রীতি-বন্ধনে মিলনের বার্তা।
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে সাতটায় যন্ত্রসংগীতশিল্পী মো. ইউসুফ খানের সরোদ বাদনে শুরু হয় উৎসব। ততক্ষণে বকুলতলায় এসে হাজির হয়েছে একদল শিশু–কিশোর৷ তাদের পোশাকেও লেগেছে শরতের রং।
সুরবিহারের শিল্পীরা শোনান ‘ওগো শেফালি বনের মনের কামনা’৷ সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা ‘দেখো দেখো দেখো শুকতারা আঁখি মেলি চায়’ গানটি শোনান।
‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায়’ নজরুলগীতিও গেয়ে শোনান তাঁরা। সীমান্ত খেলাঘর আসরের শিশুরা পরিবেশন করে রবীন্দ্রসংগীত ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়’ গানটি। এ ছাড়া বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, শিল্পবৃত্তের শিশুরা, নির্ঝরিণী একাডেমি গান ও কবিতা শোনায় দর্শক–শ্রোতাদের।
উৎসবের একপর্যায়ে শিল্পীরা সমবেতভাবে গেয়ে শোনান চিরপরিচিত ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি। একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী, প্রিয়াঙ্কা গোপ, অনিমা রায়, তানভীর আলম সজীব, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ। রফিকুল ইসলামের কণ্ঠে শোনা যায় জীবনানন্দ দাশের ‘এখানে আকাশ নীল’ কবিতাটি৷
শরৎ উৎসবের ‘শরৎ কখন’ পর্বে অংশ নেন চারুশিল্পী সুশান্ত অধিকারী, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি নিগার চৌধুরী৷ শরৎ উৎসবের ঘোষণা পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী৷
দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, ‘চিরন্তন শারদীয় উৎসবে এবার মিশে আছে বেদনার সুর। আমরা সশ্রদ্ধভাবে স্মরণ করি নব প্রভাতের স্বপ্নবহ ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি-দানকারী শহীদদের। বৈষম্যহীন মুক্ত স্বাধীন সম্প্রীতির সমাজের স্বপ্নবহ আন্দোলন জীবনে নানাভাবে পল্লবিত হোক।’ উৎসবে সম্প্রীতির আহ্বান জানান তিনি।