শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার আরও তিনটি অভিযোগ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজ বুধবার গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় দাখিল করা হয়েছে। তিনটির মধ্যে ঢাকার ঘটনা নিয়ে দুটি ও চট্টগ্রামের ঘটনা নিয়ে অপর অভিযোগটি করা হয়েছে।

এসব অভিযোগে বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনগুলোর নামও রয়েছে।

তদন্ত সংস্থায় আজ দাখিল করা তিনটি আবেদনে থাকা অভিযোগ কমপ্লেইন্ট রেজিস্টারভুক্ত করে ট্রাইব্যুনাল আইনের বিধান অনুযায়ী তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

এ নিয়ে ১৪ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় সাতটি অভিযোগ এসেছে, যার মধ্যে ছয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহতের ঘটনা নিয়ে। অপরটি হচ্ছে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সংঘাতের ঘটনায় গত ১৯ জুলাই মিরপুর–১০ নম্বর গোলচত্বরে নিহত হন আসিফ ইকবাল। আজ তাঁর বাবা এম এ রাজ্জাকের পক্ষে তদন্ত সংস্থায় অভিযোগটি করেন আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন। এতে আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জেপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো এবং অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি হিসেবে রাখা হয়।

১৮ জুলাই মিরপুরে সংঘাতের ঘটনায় এইচএসসির শিক্ষার্থী শেখ শাহরিয়ার বিন মতিন নিহত হন। তাঁর বাবা মো. আবদুল মতিনের পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন অপর আবেদনটি করেন। আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, ঢাকা উত্তর সিটির সাবেক মেয়র আতিকুলসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনকে আসামি হিসেবে রাখা হয়।

১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হন ফয়সাল আহমেদ শান্ত। তাঁর বাবা মো. জাকির হোসেনের পক্ষে আজ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান অপর আবেদনটি দাখিল করেন। এতে আসামি হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৭৭ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ দাখিল করা তিনটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি চট্টগ্রামের ও অপর দুটি মিরপুরের ঘটনা নিয়ে। এ পর্যন্ত সাতটি অভিযোগ এসেছে, যার মধ্যে ছয়টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহতের ঘটনা নিয়ে। অপরটি হচ্ছে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ। সাতটি অভিযোগেরই তদন্ত হচ্ছে, এর মধ্যে ছয়টির তদন্ত একসঙ্গে হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন হলে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন জানানো হবে।