রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের (মেম্বার) অপসারণ না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন। ঢাকা, ১৬ অক্টোবর
রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের (মেম্বার) অপসারণ না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন। ঢাকা, ১৬ অক্টোবর

ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দিলে সরকারি সেবাদান ব্যাহত হবে

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভেঙে দিলে কিংবা চেয়ারম্যানদের অপসারণ করলে প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। গ্রামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিরও আশঙ্কা রয়েছে। তাই নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের (মেম্বার) অপসারণ না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন।

আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী।

আমজাদ হোসাইন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অন্তর্বর্তী সরকার অপসারণ করতে পারে বলে তাঁরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। এ নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন। বর্তমানে ৬৫ ভাগ চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার পর কারও সঙ্গে রাজনৈতিক বিবেচনায় আচরণ করেননি।

আমজাদ হোসাইন আরও বলেন, ইউপিতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের সহযোগী এবং প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে কাজ করে থাকেন। পরিষদ ভেঙে দিলে সরকারি সেবাদান ব্যাহত হবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত কাজ করতে চান। সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সহযোগিতা চান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইউপির চেয়ারম্যানরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা বিতরণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকেন। এ ছাড়া ওয়ারিশ সনদ, চারিত্রিক সনদ, জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যুনিবন্ধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ইউপি থেকে হয়ে থাকে। গ্রামে বিভিন্ন সালিস, নতুন সড়ক নির্মাণ, পুরোনো সড়ক সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ ইউপি থেকে হয়ে থাকে। স্থানীয় সরকারের সর্বশেষ এ স্তরেও যদি সরকার হাত দেয়, তাহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট থেকে যেসব ইউপি চেয়ারম্যান পলাতক আছেন, তাঁদের বিষয়ে সরকারের করণীয় কী, এমন প্রশ্নের জবাবে আমজাদ হোসাইন বলেন, রাষ্ট্রীয় বিধিমোতাবেক সরকারের যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা-ই নেবে। প্রশাসক নিয়োগ দিলে সেটি স্থানীয় সরকারের জন্য ভালো হবে না। কারণ, প্রশাসকেরা স্থানীয় মানুষ নন। তাঁরা সবকিছু চিনবেন না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হোক, তাঁরা তা চান না। ২০২১ সালের সর্বশেষ ইউপি নির্বাচনে ৬৫ শতাংশ প্রার্থী ছিলেন স্বতন্ত্র। এতেই প্রমাণিত হয়, সাধারণ মানুষ ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রতিনিধি চান না। তবে শেষ পর্যন্ত সরকার যদি তাঁদের অপসারণ করে, তবে তাঁরা আইনি পথে হাঁটবেন।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভায় জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করে সেখানে প্রশাসক বসিয়েছে। ইউপিতেও কোথাও কোথাও প্রশাসক বসানো হয়েছে। সারা দেশে সাড়ে চার হাজার ইউপি রয়েছে।