জনসংখ্যা

বিলম্বিত জনশুমারি–উত্তর যাচাই ও কিছু প্রশ্ন

একটি শুমারির সফলতা নির্ভর করে কাজটি কেমনভাবে সম্পাদন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ, তথ্য সংকলন ও তা প্রকাশের পর্যায়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শুমারির সফলতা নির্ভর করে কাজটি কেমনভাবে সম্পাদন করা হয়েছে, তার ওপর
ফাইল ছবি

২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা–উত্তর যাচাই অনুযায়ী, বিবিএসের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছে। সে হিসাবে, ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বাদ পড়া মানুষকে যোগ করলে এখন দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১। বিবিএস এখন এই শুমারি–উত্তর যাচাই ফলাফলকে বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত জনসংখ্যার আকার ও অন্যান্য চিত্র দ্রুত জনসমক্ষে তুলে ধরবে বলে জেনেছি।

গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রাথমিক প্রতিবেদনে জনসংখ্যা ছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়েছিল, এবার বাদ পড়া জনসংখ্যার আকার অতীতের চেয়ে আরও বেশি হবে। উল্লেখ্য, ২০০১ সালের শুমারিতে সার্বিক ত্রুটি বা ভ্রান্তির হার ছিল ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অর্থাৎ এই পরিমাণ জনসংখ্যা তখনকার শুমারি থেকে বাদ পড়েছিল।

২০১১ সালে যা ছিল ৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ২০১১ সালে প্রাথমিক জনসংখ্যা হিসাবের সঙ্গে শুমারি–উত্তর যাচাই শেষে ৫৭ লাখ ২৮ হাজার ৬৫৫ জন যুক্ত হয়েছিল। আর ২০০১ সালে যুক্ত হয় ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৩২৮ জন।

সে ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের জনশুমারি ছিল বেশ চ্যালেঞ্জের। এবার এমন ত্রুটির হার বেশি যে হবে, তা মনে করার যথেষ্ট কারণও ছিল। কেননা এবারের শুমারি বর্ষাকালে হয়েছে। বর্ষাকালে দুর্গম এলাকায় তথ্য সংগ্রহ অনেক সময় কঠিনও বটে। তাই ওই সব এলাকায় বসবাসরত জনগোষ্ঠীর প্রকৃত তথ্য জনশুমারিতে অন্তর্ভুক্ত করতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে থাকতে পারেন তথ্য সংগ্রহকারীরা। তা ছাড়া শুমারি চলাকালে সিলেট, উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা বন্যাকবলিত ছিল। কোথাও কোথাও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনও ছিল।

ফলে ওই সব এলাকায় শুমারি কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করেছিলাম। বন্যাকবলিত এলাকায় খানার গণনা ও খানার বৈশিষ্ট্যসংক্রান্ত তথ্য কীভাবে নির্ভুল পাওয়া যাবে যেখানে ঘরবাড়ি পানিতে ভেসে গেছে? ফলে তথ্য সংগ্রহে ওই সময়টি যথাযথ ছিল না বলেই মনে করেছি। এ সময়কালকে পরিহার করতে পারলে ভালো হতো। শুমারি–পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জনশুমারিতে তথ্য অন্তর্ভুক্তি না হওয়ার বিষয়ে নানা অভিযোগ এসেছে। শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত থাকায় নিজের বিভাগ ও বিভাগের বাইরের শিক্ষার্থীদের (ঢাকা ও ঢাকার বাইরের) কাছ থেকেও গণনায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারা বা বাদ পড়ার বিষয়ে নানা অভিযোগ জেনেছি।

বিভিন্ন পর্যায়ে দেশের ভেতরে দেশি-বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় গণনায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারার বিষয়টিও জেনেছি। ফলে তথ্য সংগ্রহকারীরা সব এলাকায় সঠিকভাবে গণনার কাজটি সঠিকভাবে কতটা করতে পেরেছে, তা নিয়ে নিজের কাছেই প্রশ্ন জেগেছে। এ ক্ষেত্রে শুমারি–উত্তর যাচাই কাজটি যথাযথভাবে সম্পাদনের গুরুত্বও বেশ অনুভব করেছি।

শুমারি–উত্তর যাচাই

শুমারিতে সাধারণত দুই ধরনের ভ্রান্তি বা ত্রুটি (এরোর) থাকে। ‘কাভারেজ এরোর’ ও ‘কনটেন্ট এরোর’। কাভারেজ এরোরের ক্ষেত্রে কী পরিমাণ মানুষ জনশুমারিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি বা বাদ পড়েছে বা দ্বৈত গণনায় এসেছে, তা নির্ধারণ করতে হয়। আর কনটেন্ট এরোর ঘটে ব্যক্তি ও খানার বৈশিষ্ট্যগত অসম্পূর্ণ তথ্যের সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে যেসব ভ্রান্তি বা ত্রুটি ঘটে তা হলো বাদ পড়া, দ্বৈত গণনায় আসা, ভুল অন্তর্ভুক্তি।

এমন ভ্রান্তি বা ত্রুটি কী পরিমাণ ঘটেছে, তা জানতে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের পর জনশুমারি–উত্তর যাচাই করতে হয়, যা পিইসি নামে পরিচিত। পিইসির পর সংশোধিত আকারে জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। কোনো শুমারিই শতভাগ নির্ভুল বলে দাবি করা যায় না।

ফলে কী ধরনের এবং কী পরিমাণ ভ্রান্তি বা ত্রুটি ঘটেছে, তা নিরূপণে জাতিসংঘের নির্দেশিত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি রয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী স্বাধীন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনশুমারি–উত্তর যাচাই কাজ সম্পাদন, প্রতিবেদন প্রকাশ এবং পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। জনশুমারি–উত্তর যাচাইয়ের কাজটি করেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।

৬ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা–উত্তর যাচাই ফলাফল প্রকাশ করে বিআইডিএস। এ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে আমি আমন্ত্রিত ছিলাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বনির্ধারিত কাজ থাকায় অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে হয়তো প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ পেতাম। পরে গণমাধ্যমের খবরে শুমারি–উত্তর যাচাইয়ের ফলাফল জানতে পেরেছি। এখানে দেশের জনসংখ্যা ও জনশুমারি–উত্তর যাচাই নিয়ে কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।

কিছু পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন

জনশুমারি–উত্তর যাচাই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হয়েছে কি না? আমি স্বতন্ত্র শুমারি–উত্তর যাচাই বা পিইসি করার কথা বলেছিলাম। পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে কলামও লিখেছিলাম। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে টকশো, সাক্ষাৎকার ও মন্তব্যের পরিসরে এ ব্যাপারে মতামত দিয়েছি। জনসংখ্যা বিষয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণায় যুক্ত থাকায় পেশাগত ও ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার পরিসরে মতামত প্রদানে নৈর্ব্যক্তিক থাকার চেষ্টা করেছি। এখন বিআইডিএস শুমারি–উত্তর যাচাই ফলাফল প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা পরামর্শও নিয়েছে। তাদের ডাকা দুটি সভায় যোগ দিয়েছি। নিজের মতামতও দিয়েছি। সে জন্য বিআইডিএসকে ধন্যবাদ জানাই।

বিবিএসকেও একইভাবে ধন্যবাদ জানাই শুমারির আগে প্রশ্নপত্র নকশা প্রস্তুতকালে মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের জন্য। এ বিষয়ে তারা যথেষ্ট আন্তরিকও ছিল। তবে শুমারি–উত্তর যাচাইয়ের কাজটি বিবিএস বিআইডিএসকে দিয়ে কাজটি করানোর ক্ষেত্রে কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন করেছে, তা আমার জানা নেই।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিআইডিএস গবেষণা প্রতিষ্ঠান হলেও সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। ফলে বিআইডিএস বিবিএস বা সরকার থেকে কতটুকু নিরপেক্ষ থেকে এ যাচাই কাজ করতে পেরেছে, সেটি নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে।

দ্বিতীয়ত, পিইসির সম্পাদন ও ফলাফল প্রকাশে বেশ বিলম্ব হয়েছে বলেই আমি মনে করি। কেননা যাচাই কাজটি শুমারি সম্পাদনের পর তিন মাস বা তারও কম সময়ে করার কথা বলা আছে জাতিসংঘের গাইডলাইনে (২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইউএনএফপিএর ইন্টারডিভিশনাল ওয়ার্কিং গ্রুপ অন সেন্সাস প্রকাশিত টেকনিক্যাল ব্রিফ)। এমন সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কারণও রয়েছে। সেটা হলো শুমারি–পরবর্তী সময়ে নতুন জন্ম, মৃত্যু ও স্থানান্তরের মতো জনমিতিক বিষয়গুলো থাকে। বিবিএস শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল গত বছরের ২৭ জুলাই। তিন মাস বা তারও কম সময়ের মধ্যে পিইসি করার নির্দেশনা থাকলেও বিবিএস তা বিআইডিএসকে বলেছিল কি না বা কোনো সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল কি না, সেটা আমার জানা নেই।

তৃতীয়ত, এবারের পিইসিতে কাভারেজ এরোরের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা কনটেন্ট এরোরের ক্ষেত্রে সেভাবে হয়নি। মূলত জনসংখ্যার কাভারেজ এরোরকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি। ফলে উপাত্তের গুণগত দিক নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

মনে রাখতে হবে যে কাভারেজ ভালো হলেও প্রাপ্ত উপাত্ত গুণগত মানে দুর্বল হতে পারে। গৃহস্থালি গণনা ও তার গুণগত দিকের অবস্থা বিশেষভাবে জানা যায়নি। একটি শুমারির লক্ষ্য কিন্তু শুধু জনসংখ্যা গণনা নয়, একই সঙ্গে গৃহস্থালিও। প্রাসঙ্গিক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা গতিপ্রকৃতি নিরূপণে গৃহস্থালির সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গৃহস্থালি বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে খানা, পানির উৎস, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ–সুবিধা ইত্যাদি।

চতুর্থত, শুমারি প্রশ্নমালায় ৩৫টি প্রশ্ন সবাইকে করা হয়েছে কি? অভিযোগ এসেছে, সব প্রশ্নের উত্তর নেওয়া হয়নি। সেসব প্রশ্নের ক্ষেত্রে কী পরিমাণ কনটেন্ট এরোর ঘটেছে, তা জানা দরকার ছিল।

পঞ্চমত, সব বিদেশি নাগরিক গণনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি? এবারই প্রথম প্রশ্নপত্রে বিদেশি নাগরিকদের তথ্যসংক্রান্ত প্রশ্ন ছিল। দেশে কী পরিমাণ বিদেশি নাগরিক রয়েছে, তার একটা নির্ভরযোগ্য তথ্যভান্ডার থাকা জরুরি। তা ছাড়া বিদেশে কী পরিমাণ মানুষ রয়েছে, সেটার সঠিক উত্তর এসেছে কি? এসব প্রশ্নের ক্ষেত্রে ভ্রান্তি বা ত্রুটির মাত্রা নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা দরকার।

ষষ্ঠত, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিষয়টি বিশ্লেষণ করলে লক্ষ করা যায়, ২০১১ সালের শুমারিতে ২৪টি ভিন্ন জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল। এবারের শুমারিতে ৫০টি জনগোষ্ঠীকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ১১ বছরের ব্যবধানে এবারের শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বেড়েছে ৬৪ হাজার ১৮ জন।

ফলে এ রকম আরও তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রাথমিক গণনায় কী পরিমাণ কাভারেজ ও কনটেন্ট এরোর ঘটেছে, তা শুমারি–উত্তর যাচাই প্রতিবেদনে থাকা উচিত বলেই আমি মনে করি। অর্থাৎ জনমনে যেসব বিষয়ে প্রশ্ন জেগেছে যেমন বস্তিবাসী, ভাসমান মানুষ ইত্যাদি সম্পর্কে শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টতা থাকা বাঞ্ছনীয় সবার আস্থা অর্জনে।

সপ্তমত, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে কনটেন্ট এরোর কী? শুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেশে মোট ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী রয়েছে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বিবিএসের ২০২১ সালের জাতীয় প্রতিবন্ধী জরিপে তা ২ দশমিক ৮০ শতাংশ।

ফলে শুমারিতে ১২ ধরনের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সঠিকভাবে গণনায় অন্তর্ভুক্ত ও চিহ্নিতকরণ হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়। কেননা, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নির্ণয় সহজসাধ্য কাজ নয়। প্রতিবন্ধিতার বিভিন্ন ধরন পরিমাপে বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ বা দক্ষতার প্রয়োজন। শুমারিকালে তথ্য সংগ্রহকারীরা এ ব্যাপারে কতটুকু প্রশিক্ষিত ছিলেন এবং যথাযথ তথ্য সংগ্রহ এ ক্ষেত্রে করতে পেরেছেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

অষ্টমত, বিআইডিএস পিইসি প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও বিবিএসের প্রস্তুতির ঘাটতির বিষয়টি সামনে এসেছে। কারণ, পিইসি প্রতিবেদন প্রকাশের দিনই দেশের মানুষের জনসংখ্যার সার্বিক চিত্র জানার জন্য আগ্রহ ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। আমি মনে করি, কাজটি দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত করা উচিত বিবিএসের। দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে তারা।

চাই নির্ভুল শুমারি

একটি শুমারির সফলতা নির্ভর করে কাজটি কেমনভাবে সম্পাদন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ, তথ্য সংকলন ও তা প্রকাশের পর্যায়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের উচিত বিবিএসের মতো সরকারি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে বিশেষায়িত দক্ষ জনবল ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। অধিক বিনিয়োগ করা এবং স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করা।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়কালে দেশের প্রয়োজনে সময়মতো গুণগত উপাত্ত তৈরি ও সরবরাহে সদা সচেষ্ট থাকা জরুরি। বর্তমান বাস্তবতায় শুমারি–উত্তর যাচাই ফলাফল প্রকাশ পরবর্তী সময়ে বিবিএস এখন আর্থসামাজিক ও জনমিতিক জরিপসহ পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত সম্পাদন করবে বলে আমি মনে করি। তবে গুণগত উপাত্তের বিষয়টিই আমার কাছে মুখ্য। দেশের উন্নয়ন পরিমাপে ও নীতি কৌশল গ্রহণ ও বাস্তবায়নে আমাদের দরকার গুণগত উপাত্ত, যার কোনো বিকল্প নেই। ফলে সেদিকে লক্ষ রেখে বিবিএসের সব কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে হবে।

  • ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম অধ্যাপক, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • ই-মেইল: mainul@du.ac.bd