পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় মাত্রাতিরিক্ত ভোগের জোগান দিতে গিয়ে কার্বন নিঃসরণ, বন উজাড়সহ নানাভাবে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে। এতে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই মানুষের জীবনযাত্রায় ভোগের মাত্রা যৌক্তিক পর্যায়ে থাকা প্রয়োজন।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এক সেমিনারে যুক্তরাজ্যের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক জিওফ উডের আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। ‘রিডিস্কোভারিং আওয়ার কমনওয়েলথ: অ্যা ফিলোসফিক্যাল আর্গুমেন্ট অ্যাবাউট দ্য কেস ফর দ্য প্রিকশনারি প্রিন্সিপাল ইন রিলেশন টু ক্লাইমেট চেঞ্জ উইথ এন ইন্টার–জেনারেশনাল ডিসকাউন্টিং থিম’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)।
অধ্যাপক জিওফ উড বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানিক নীতি ও কৌশলগত পরিকল্পনা প্রয়োজন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সবচেয়ে দুর্বলদের আগে ও খুব বাজেভাবে আঘাত করবে। এর প্রভাবে অসংখ্য প্রাণী ক্ষতির শিকার হবে, যারা পৃথিবীকে বসবাসের জন্য সুন্দর করে রেখেছে।
‘এখন যারা জন্মগ্রহণ করছে তাদের নাতি–নাতনি ও তাদের পরবর্তী প্রজন্ম ২১০০ শতাব্দীতে পৌঁছে চলতি শতাব্দীতে পৃথিবীকে ধ্বংস করার জন্য আমাদের অভিশাপ দেবে,’ বলেন জিওফ উড।
এমন প্রেক্ষাপটে তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জীবনযাপন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। খাদ্য গ্রহণ, পরিবহন, ভ্রমণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের দ্য ইন্টারগভার্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিআইডিএসের প্রফেশনাল ফেলো অধ্যাপক এম এ সাত্তার মন্ডল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টা মানুষের আচরণগত বিষয় থেকেই এসেছে। যেমন, আমরা বন উজাড় করে ফেলেছি। গ্রিন হাউজ গ্যাস, রেফ্রিজারেটরসহ যত আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি, সেসব কারণেই জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। ’
অধ্যাপক এম এ সাত্তার মন্ডল বলেন, ‘ভোগবাদী সমাজে আমাদের চাহিদা মেটানোর জন্য এসব করা হয়। ভোগবাদে সবসময় যুক্তিসংগত আচরণ থাকে না। ফলে চাহিদা মেটাবার জন্য অথবা এটাকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নেওয়ার জন্য অজান্তেই আমরা ভবিষ্যতকে বিপদাপন্ন করে তুলি।’