হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

অভিযোগ অনুসন্ধানের বিরুদ্ধে এস আলমের আবেদনের শুনানি মুলতবি

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের করা আবেদনের (লিভ টু আপিল) শুনানি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ওই আবেদন করা হয়েছিল।

ওই বিষয়বস্তুর ওপর সব পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আগের দেওয়া আদেশ চলমান থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

এর আগে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে গত ৪ আগস্ট “এস আলম’স আলাদিন’স ল্যাম্প” (এস আলমের আলাদিনের চেরাগ) শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। এরপর গত ৬ আগস্ট হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। অনুমতি ছাড়া বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তর নিয়ে এস আলম ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে এস আলম ও তাঁর স্ত্রী গত ২১ আগস্ট লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন, যা গত ২৩ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে চেম্বার আদালত বিষয়বস্তুর ওপর সব পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন। একই সঙ্গে লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ৮ জানুয়ারি শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। ধার্য তারিখে লিভ টু আপিলকারীদের আইনজীবী সময়ের আরজি জানালে আপিল বিভাগ ১৫ জানুয়ারি (আজ) শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি ওঠে।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

শুনানিতে আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি বলেন, হাইকোর্ট ওই বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) রুল ইস্যু করতে পারেন কি না—এর সঙ্গে আইনগত ব্যাখ্যা জড়িত। কোনো কোনো অবস্থায় স্বতঃপ্রণোদিত রুল ইস্যু করা যায়—সে বিষয়ে নজির আছে। এটি ওই অবস্থার মধ্যে পড়ে না। এ ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রণোদিত রুল ইস্যু করার সুযোগ নেই।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, বিষয়টি আদালতের (হাইকোর্টের) নজরে কে এনেছিলেন? তখন আজমালুল হোসেন কেসি বলেন, আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। আদালত বলেন, এরপর কি আর দায়দায়িত্ব নেই? তখন আজমালুল হোসেন কেসি বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রচারণার জন্য। আদালত বলেন, ওনাকে (সৈয়দ সায়েদুল হক) কি পক্ষ করেছেন? তখন আজমালুল হোসেন কেসি বলেন, পক্ষ করা হয়নি। পক্ষ করা উচিত ছিল। শুনানি মুলতবি করা হচ্ছে। স্থিতাবস্থা চলমান থাকবে।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপিল বিভাগ শুনানি ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেছেন। এর মধ্যে লিভ টু আপিলে সৈয়দ সায়েদুল হককে পক্ষভুক্ত করা হবে। চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থিতাবস্থার আদেশ চলমান রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে অনুসন্ধানসহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।’