ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘পারফরম্যান্স বোনাস’ হিসেবে প্রণোদনা দেওয়ার ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কোনো বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৩১ জুলাই কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ওই রিট করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৭ এপ্রিল ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ২৯১তম সভায় পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড (উৎসাহ বোনাস) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। করোনা মহামারি-পরবর্তী ২০২০-২১ অর্থবছরের পারফরম্যান্সের জন্য ঢাকা ওয়াসার স্থায়ী, চুক্তিভিত্তিক ও প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তিনটি মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বোনাস দেওয়া হবে। গত ২৫ জানুয়ারি ২৮৬তম সভায় কর্মীদের একটি মূল বেতনের অর্ধেক ইন্টেরিম (অন্তর্বর্তীকালীন) পারফরম্যান্স বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আর গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা ওয়াসার বোর্ডের সভায় পানির দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।
পরে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিধি প্রণয়ন ছাড়া পানির মূল্য নির্ধারণ ১৯৯৬ সালের ওয়াসা আইনের ২১ ও ২২ ধারার পরিপন্থী। ওয়াসা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, কোম্পানি নয়। যে কারণে ওয়াসার কর্মীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জাতীয় পে-স্কেল অনুসারে বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন। তাই ওয়াসার কর্মীরা কোনো “পারফরম্যান্স বোনাস” ও “পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড” (উৎসাহ বোনাস) পেতে পারেন না। ওয়াসার কর্মীদের “পারফরম্যান্স বোনাস” দেওয়ার ওপর অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।’