প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনি জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের সময় তরুণ বিপ্লবীদের আঁকা বর্ণিল ও বিচিত্র গ্রাফিতি ঘুরে দেখেছেন।
এ সময় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্রদের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর ও নগরের দেয়ালে তরুণ শিক্ষার্থীদের আঁকা সেরা গ্রাফিতি নিয়ে একটি আর্ট বুক প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ‘দি আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামের একটি আর্ট বুক প্রকাশ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তরুণ চিত্রশিল্পীদের আঁকা-লেখায় ঢাকা সারা দুনিয়ার গ্রাফিতি রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পায়। দেয়ালগুলো পরিণত হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিশাল ক্যানভাসে। সরকারকে নানা শক্তিশালী বার্তা দিতে তাঁরা বিভিন্ন সৃজনশীল ও হৃদয়গ্রাহী স্লোগান ও কবিতা লিখেছেন। এসব বার্তা যেন বিপ্লবের চেতনা ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার শিল্পিত প্রতিফলন। ছাত্ররা দেশবাসীর সমর্থন আদায়ে শিল্পকর্মের মাধ্যমে মুক্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে আসা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদলকে এই আর্ট বুক উপহার দিয়েছেন। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তাদের হাতে এ উপহার তুলে দেন তিনি।
এ ছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরের সময়ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস কানাডার প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের হাতে দি আর্ট অব ট্রায়াম্ফ নামের আর্ট বুকটির কপি তুলে দেন।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে গ্রাফিতির ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে বলেছিলেন, এসব গ্রাফিতিতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পাশবিক শক্তিকে প্রতিহত করতে নৃশংস এক বাহিনীর মুখোমুখি আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও যুবকদের দাবিদাওয়া, আবেগ-অনুভূতি, আশা-আকাঙ্ক্ষা চিত্রিত হয়েছে।
মার্কিন প্রতিনিধিদলকে ঢাকার দেয়ালগুলো একবার ঘুরে দেখার অনুরোধ করে অধ্যাপক ইউনূস তখন বলেছিলেন, এসব গ্রাফিতি এখনো রাজধানীর দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। এগুলো শুধু বিপ্লবের পরই নয়, আন্দোলন চলাকালেও শিক্ষার্থীরা সরকারি বাহিনীকে অমান্য করে এসব গ্রাফিতি আঁকেন।