কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ রাত সাড়ে আটটায়
কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। আজ রাত  সাড়ে আটটায়

কক্সবাজারে আরও দুজনের মৃত্যু

রাতে খেতে বসেছিলেন সবাই, হঠাৎ ঘরের চালায় ধসে পড়ে পাহাড়ের খণ্ড

অব্যাহত ভারী বর্ষণে কক্সবাজারে পাহাড়ধসে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহরীপাড়ায় এবং শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পৃথক পাহাড়ধস হয়।

দক্ষিণ মোহরীপাড়ায় পাহাড়ধসে নিহত হন গৃহবধূ লায়লা বেগম (৩৪)। এ সময় আহত হন তাঁর ছেলে মো. হানিফ। নিহত গৃহবধূর স্বামী ফেরদৌস আহম্মদ বলেন, রাত আটটার দিকে ভারী বর্ষণ চলছিল। এ সময় তাঁরা ঘরের রান্নাঘরে রাতের খাবার খেতে বসেছিলেন সবাই। হঠাৎ পাশের পাহাড়ের খণ্ড ধসে পড়ে তাঁর ঘরের চালার ওপর। মাটিচাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তাঁর স্ত্রী। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে রাত আটটার দিকে কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পাহাড়ধসে এক পরিবারের ছয়জন মাটিচাপা পড়েন। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মাটি সরিয়ে পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করলেও মিম নামের আট বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ওই এলাকার মো. সেলিমের মেয়ে।

এর আগে আজ সকালে কক্সবাজার শহরে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় পাঁচ বছরের এক শিশু ও একজন গৃহবধূ মারা গেছেন। এর মধ্যে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার (৩০) ও সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান (৫) মাটিচাপা পড়ে মারা যায়। এ নিয়ে এক দিনে পাহাড়ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

গত ২১ জুন শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাহাড়ধসে চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এরপরও বন্ধ হয়নি পাহাড় কাটা ও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস।

জেলায় গত বুধবার দুপুর থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। একটানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রকিবুজ্জামান বলেন, নিহত জমিলা আক্তার সকালে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। তাঁর স্বামী আরেক কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। সেখানে হঠাৎ পাহাড়ধসে পড়লে জমিলা চাপা পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় ঘরের মাটির দেয়ালচাপা পড়ে মারা যায় নাজমুল হাসান নামের পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু। পরিবারটি জানায়, ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসে বিশাল এক খণ্ড নাজমুলদের ঘরের ওপর পড়ে। তাতে মাটির দেয়াল ভেঙে সে চাপা পড়ে। স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারে একটানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে থাকা লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে এলাকায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে।