নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইলে একই পরিবারের পাঁচজনকে হত্যা মামলায় মো. মাহফুজকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার রায় দেন।
আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) গ্রহণ করে এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির করা জেল আপিল ও আপিল খারিজ করে এ রায় দেওয়া হয়।
এর আগে ওই মামলায় ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের দেওয়া রায়ে মাহফুজকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের পর আসামির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই জেল আপিল ও আপিল করেন মাহফুজ। ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আপিলের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি প্রথম আলোকে বলেন, মাহফুজের সঙ্গে তাঁর মামির সম্পর্ক ছিল। পরিবারের সদস্যের কাছে বিষয়টি জানাজানি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে একে একে পাঁচজনকে খুন করেন মাহফুজ। এর মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। মাহফুজ নিজেও দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন। আসামি ঠান্ডা মাথার খুনি বলে হাইকোর্ট রায়ে উল্লেখ করেছেন। ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি মাহফুজ গ্রেপ্তার হয়। এখন কনডেমড সেলে আছেন।
নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি রাতে ‘আশেক আলী ভিলা’ নামে বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন মাহফুজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়ির ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে। খুনের শিকার হন মাহফুজের মামি লামিয়া ও তাসলিমা আক্তার (৪০), তাসলিমার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫) ও ভাই মোশারফ (২৫)। এ ঘটনায় তাসলিমার স্বামী ও মাহফুজের মামা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ভাগনে মাহফুজসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় ওই বছরের ১৭ জানুয়ারি হত্যা মামলাটি করেন।