বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হৃদয় চন্দ্র তরুয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হৃদয় চন্দ্র তরুয়া

হাসিনা, কাদেরের সঙ্গে আসামির তালিকায় আছেন সাংবাদিকও

চট্টগ্রামে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৭০০ জনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়াকে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছাড়াও আইজিপি, পুলিশ কর্মকর্তা ও সাংবাদিকেরা রয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হৃদয় তরুয়ার বন্ধু আজিজুল হক বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৯২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭১টি হত্যা মামলা।

আজ শনিবার সকালে ওসি আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, চান্দগাঁও থানায় করা মামলায় আসামি হিসেবে ২০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৫০০ জনকে।

উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নূরে আলম মিনা, সাবেক নগর পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলার তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ মহসিন, পাঁচলাইশ থানার সাবেক ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক।

মামলায় নাম উল্লেখ করা ২০৬ আসামির বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী। মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় তরুয়া অংশ নেন। আসামিদের কয়েকজনের নির্দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসামিদের অনেকে হামলায় যোগ দেন। ১৮ জুলাই নগরের চান্দগাঁও এলাকায় গুলিতে আহত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় হৃদয়কে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় ২৩ জুলাই মারা যান তিনি।