নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার (গলায় জুতার মালা পরানো) ঘটনা রোধে বিবাদী ব্যক্তিদের অবহেলার বিষয়ে বিচারিক অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
নড়াইলের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই বিষয়ে অনুসন্ধান করে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
৪ জুলাই আইন ও সালিশ কেন্দ্র ওই রিট করে, যার ওপর আজ শুনানি হলো।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক ও মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান।
পরে আইনজীবী অনীক আর হক প্রথম আলোকে বলেন, স্বপন কুমার বিশ্বাসকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং তিনিসহ তাঁর পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন দাখিলের পর আগামী ১৭ অক্টোবর বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
রুলে নড়াইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওই ঘটনাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে ‘জনতার বিচার’ বন্ধে এবং লাঞ্ছনার শিকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সুরক্ষায় বিবাদী ব্যক্তিদের ব্যর্থতা—নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, নড়াইলের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিবাদী ব্যক্তিদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাময়িক বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নড়াইল সদরের এক কলেজছাত্রের পোস্টকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে গত ১৮ জুন কলেজের অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়৷ স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ওই ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পরদিন কলেজে গেলে কিছু মুসলমান ছাত্র তাঁকে ওই পোস্ট মুছে ফেলতে বলেন। ওই সময় অধ্যক্ষ ওই ছাত্রের ‘পক্ষ নিয়েছেন’ এমন রটনা ছড়িয়ে পড়লে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।