কিশোর আলো তো তৃতীয় শ্রেণির খালেদ বিন খায়েরও পড়ে, আবার অষ্টম শ্রেণির কিশোর মাধুর্যও পড়ে। কিন্তু এই ম্যাগাজিনের কিছু বিষয়ে তাদের পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। এই যেমন, খালেদের ‘অ্যাডভেঞ্চার অব ইলু বিলু’ ভালো লাগে, ওদিকে মাধুর্য পৃষ্ঠা ওলটালেই শুধু বিজ্ঞাপন দেখে।
খালেদ, মাধুর্য, সুমাইয়া, ফাবিহা কিশোর আলোর ভালো পাঠক বটে। ওরা এর খুঁটিনাটি দিক ভালোভাবেই জানিয়েছে। কারণ, ওরা সবাই পড়ে। সফল ও ভালো মানুষ হতে চাইলে পড়তে হবে, ভালো পাঠক হতে হবে।
শিশুকাল পেরিয়ে আগেই কৈশোরে পদার্পণ করেছে কিশোর আলো। কিন্তু সে তৃতীয় শ্রেণির শিশু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণের কাছেও সমান জনপ্রিয়। গতকাল মঙ্গলবার ছিল কিশোর আলোর ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘আকাশের মতো বাধাহীন’ স্লোগানে কিশোর আলোর কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়। সেখানেই হয়েছিল শিশু-কিশোর-তরুণদের ঘরোয়া আড্ডা আর গান।
শেষ দিকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। দেশ গঠনে কিশোর-তরুণদের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনে এই কিশোর-তরুণেরা জায়গা করে দিয়েছে। আন্দোলনে তরুণদের যে সফলতা ছিল, তা ধরে রাখতে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
গল্পের বই পড়ার পাশাপাশি কবিতা পড়ার পরামর্শ দিয়ে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, পরীক্ষায় ভালো করা এবং ভালো ছাত্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গান-বই পড়াসহ বিভিন্ন ক্লাবের মতো কর্মসূচির সঙ্গেও যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে দুজন লেখক তানজিনা হোসেন ও শিবব্রত বর্মনকে নিয়ে হাজির হন কিশোর আলোর সহকারী সম্পাদক আদনান মুকিত। তাঁদের কাছে প্রশ্নের যেন শেষ নেই উপস্থিত শিশু-কিশোরদের।
শুভেচ্ছা জানাতে এসে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন কিশোর আলো নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শোনান। ১১ বছর ধরেই কিশোর আলোর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা জানান ছড়াকার রোমেন রায়হান।
সম্প্রতি সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ দুটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছে। সেখানে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি অলিম্পিয়াড বাছাইয়ের উদ্যোগে অন্যতম পার্টনার ছিল কিশোর আলো। আন্তর্জাতিক এআই অলিম্পিয়াডে পদকজয়ী চারজনের মধ্যে আবরার শহীদ, রাফিদ আহমেদ ও আরেফিন আনোয়ার গতকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শুধু বক্তব্যেই থেমে থাকেনি এ আয়োজন। অনুষ্ঠানে গান শোনান খৈয়াম সানু সন্ধি ও আহমেদ হাসান সানি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন কার্টুনিস্ট নাইমুর রহমান ও সব্যসাচী চাকমা।