জাতীয় সংসদের স্পিকারের অবর্তমানে তাঁর প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালন করবেন অন্তর্বর্তী আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতীয় সংসদ সচিবালয় (অন্তর্বর্তী বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানেই এই বিষয়টি রয়েছে। রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশটি জারি করলে আইন উপদেষ্টা এই দায়িত্ব পালন করবেন।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানানো হয়। এ ছাড়া সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও এই বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতীয় সংসদ সচিবালয় (অন্তর্বর্তী বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ-২০২৪ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য সংসদ সচিবালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা যেমন পদ সৃজন ও বিলুপ্তি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংখ্যা নির্ধারণ ও হ্রাস-বৃদ্ধি, বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন, তৃতীয় ও তদূর্ধ্ব গ্রেডে পদোন্নতি, নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়সহ অন্যান্য সব বিষয় (সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৪ অনুযায়ী সংসদ কার্য সংক্রান্ত দায়িত্ব ব্যতীত) সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার (আসিফ নজরুল) ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। অন্যান্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা সংসদ সচিবালয়ের সচিবকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।
আইনের খসড়ায় সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টাকে চেয়ারম্যান করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ সচিবালয় কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কিছু দায়িত্ব যেমন পদ সৃজন ও বিলুপ্তি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংখ্যা নির্ধারণ ও হ্রাস-বৃদ্ধি, বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন ইত্যাদি সংসদ সচিবালয় কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে স্পিকার পালন করে থাকেন।
এই অধ্যাদেশের উদ্যোগের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট দেশ ত্যাগ করায় রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন। পরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও পদত্যাগ করেন। স্পিকারের অবর্তমানে সংসদ সচিবালয়ের দৈনন্দিন, প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজসহ অন্যান্য বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আইনানুযায়ী সংসদের স্পিকার সংসদ সচিবালয়ের প্রশাসনিক প্রধান।
বাসসের খবরে বলা হয়, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, তৈরি পোশাকখাতের শ্রমিকেরা যে আন্দোলন করছে, সেটাকে সরকার কোনো ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে না। দেশে গণঅভুত্থানের পরে অনেক কারখানার মালিক পালিয়ে গেছেন, ফলে ওইসব কারখানা বেতন দিতে পারছে না। সেখানে আন্দোলন হচ্ছে। আগেও এরকম কিছু কারখানায় আন্দোলন চলতো। এই আন্দোলনকে সরকার কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা হিসেবে দেখছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শফিকুল আলম জানান, এই মুহূর্তে তৈরি পোশাকখাতের ৯৯ শতাংশ কারখানা চালু আছে।