রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও জ্বালানিসংকটে পড়েছে। এ সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে জ্বালানি সহযোগিতা প্রতিষ্ঠায় মনোযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের কথা রয়েছে। সোমবার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে কোনো অগ্রগতি হবে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে ভারত কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। সুতরাং তাদের যদি কোনো উদ্বৃত্ত থাকে এবং আমরা যদি দীর্ঘ মেয়াদে তাদের সঙ্গে কিছু করতে পারি, আমাদের নিশ্চয়ই সেই চেষ্টা থাকবে। তবে এটা নির্ভর করছে তাদের (ভারতের) কতটুকু উদ্বৃত্ত আছে সেটার ওপর।’
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তাদের (ভারতের) নিজস্ব চাহিদা ও জোগান পরিস্থিতি কতটা ভালো তা–ও দেখতে হবে। নানা সময়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছে বাংলাদেশ। যেহেতু এখন কিছুটা সমস্যায় রয়েছে, তাই এ ব্যাপারেও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যেতে পারে বলে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ রয়েছে। আমরা সবগুলোই চালু রাখতে চাই। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে যদি উদ্বৃত্ত থাকে, তবে সেখান থেকেও আমরা আনার ব্যবস্থা করতে পারি। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য সংযুক্তির প্রয়োজন হবে। এগুলো হঠাৎ হবে না। আগে যদি রাজনৈতিক বোঝাপড়া থাকে, তাহলে এটা করা সম্ভব হবে। এ ধরনের সফর রাজনৈতিক বোঝাপড়া বাড়াতে সব সময় ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমরা মনে করি।’
তিস্তা ইস্যু তুলবে বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘বিষয়টি যেহেতু একবার সম্পন্ন হয়েছিল, তাই আমরা চাইব তারা তাদের প্রক্রিয়া শেষ করে বিষয়টি নিয়ে ঘোষণা দেবে। এ প্রত্যাশা আমাদের সব সময় থাকবে। আমরা বিষয়টি তুলব।’
প্রধানমন্ত্রীর সফরের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এ সফরে নির্দিষ্ট কোনো অ্যাজেন্ডা আছে—বিষয়টি সে রকম কিছু নয়। দুই দেশের সর্বোচ্চ স্তরে বছরে একবার আলোচনা হলে সব বিষয় আলোচনায় উঠে আসবে।’
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি রাষ্ট্রীয় সফর এবং দুই বন্ধুভাবাপন্ন দেশের মধ্যে সব সময় হয়। গত বছর ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেছেন। দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক যেটা আছে, সেটার বিভিন্ন যেসব ইস্যু আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে এবং যেসব ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে কোন কোন বিষয়ে সহযোগিতা হতে পারে, সে বিষয়গুলোও যাচাই করা হবে।