চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী থেকে দেড় বছর পর আবারও আড়াই মণ ওজনের একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জোয়ারের সময় হাটহাজারী উপজেলার গড়দোয়ারা ইউনিয়নের সিপাহির ঘাট এলাকা থেকে নদীতে ভাসমান অবস্থায় মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়। এটি উদ্ধার করে হালদা নিয়ে গবেষণায় নিয়োজিত ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) কর্মীরা।
উদ্ধারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডলফিনটির ওজন প্রায় ৯০ কেজি। দৈর্ঘ্য ৭ ফুট। একই দিন সন্ধ্যায় সেটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরির কর্মীদের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত শেষে রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী হ্যাচারির পাশে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর নদীর রাউজান অংশের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাটে মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল। এ নিয়ে গত সাড়ে পাঁচ বছরে হালদা থেকে ৪৩টি মৃত ডলফিন উদ্ধার হলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত হালদা ও এর শাখাখালে মোট ৪৩টি ডলফিন মরে ভেসে ওঠে। দু-একটি ছাড়া প্রায় সব ডলফিনেরই শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করেছিল উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ। একাধিক ডলফিনকে হত্যাও করা হয়।
হালদা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতি বিপন্ন প্রজাতি) জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী হলো ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই ছিল ১৭০টি। গত সাড়ে পাঁচ বছরে হালদায় ৪৩টি ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন নদী ও প্রাণী বিশেষজ্ঞরা।
নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান মনজুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মৃত একটি ডলফিন উদ্ধার করেন নদীর সুরক্ষায় কাজ করা আইডিএফ প্রকল্পের কর্মীরা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা ল্যাবরেটরির কর্মীরা সেটির ময়নাতদন্ত করেছেন। এরপর সেটি মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের ফলাফল পাওয়ার পরে ডলফিনটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।