প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে দেশের সামরিক ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আজ সোমবার গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নৌবাহিনীর প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’-এর কমিশনিং অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০১৭ সালের ১২ মার্চ নৌবহরে দুটি সাবমেরিন (বিএনএস নবযাত্রা ও বিএনএস জয়যাত্রা) যুক্ত করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
এ সময় নৌবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে দেশ গড়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। কারণ, আমরা আমাদের বিশাল সামুদ্রিক সম্পদ অন্বেষণ করার জন্য একটি সুনীল অর্থনীতি কর্মপন্থা নিয়েছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প বিকাশের অনেক সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে হামলা হলে তাঁর সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম হিসেবে গড়ে তুলছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যদি বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতিতে পড়ে, এটা মাথায় রেখে আমরা আমাদের বাহিনী প্রস্তুত করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট, ৪টি বড় প্যাট্রোল ক্র্যাফট, ৫টি প্যাট্রোল ক্র্যাফট, ২টি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে। এ সময় তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। কারণ, এই বাহিনী শুধু বাংলাদেশের জন্য জাহাজ নির্মাণই করছে না, বিভিন্ন জলযান নির্মাণ করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করছে।
অনুষ্ঠানে পেকুয়া ভেন্যু থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে নৌবাহিনীর প্রধান সাবমেরিন ঘাঁটির কমান্ডিং অফিসার কমোডর এম আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরমান (অর্ডার) হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনএস শেখ হাসিনার নামফলক উন্মোচন করা হয়। নবনির্মিত সাবমেরিন ঘাঁটিতে একসঙ্গে মোট ছয়টি সাবমেরিন ও আটটি যুদ্ধজাহাজ থাকতে পারে।